ব্রুনাইস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৯তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করেছে। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে দূতাবাস প্রাঙ্গণে দেশটির দারুসসালামে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এয়ার ভাইস মার্শাল (অব:) মাহমুদ হোসেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে দিনের কর্মসূচি সূচনা করেন।
Advertisement
ঐতিহাসিক এই দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে দূতাবাসের অভ্যর্থনা কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কোরআন তেলাওয়াত ও তরজমা, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ, মুক্তি সংগ্রামের দীর্ঘ পরিক্রমায় আত্মত্যাগী সব শহীদসহ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের উত্তরোত্তর উন্নয়ন কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
এরপর দূতালয় কর্মকর্তারা মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পাঠানো বাণী পাঠ করেন। এরপর মুক্ত আলোচনা পর্বে হাইকমিশনার এয়ার ভাইস মার্শাল (অব:) মাহমুদ হোসেন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা স্মরণ করেন এবং দিবসটির তাৎপর্য আলোকপাত করেন।
২৭ মার্চ সন্ধ্যায় এ উপলক্ষে ব্রুনাই-এর রাজধানী বন্দর সেরী বেগাওয়ানের ‘এ্যাম্পায়ার হোটেলের ইন্দিরা সমুদ্র হল’ এ একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রুনাইয়ের যুব, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রী ইয়াং বারহোরমাট অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল দাতো পাদুকা সেরী হাজি আমিনুদ্দিন ইহসান বিন পেহীন ওড়াং কায়া সাইফুল মুলক দাতো সেরী পাদুকা হাজি আবেদীন। দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।
Advertisement
এরপর হাইকমিশনার এয়ার ভাইস মার্শাল (অব:) মাহমুদ হোসেন তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ বিনির্মাণে আত্মত্যাগী সব শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতিপত্র পাওয়ায় উপস্থিত সবাইকে অভিনন্দন জানান।
এ ছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রসরমান বাংলাদেশের রূপকল্প-২০২১, ২০৪১ বাস্তবায়নে ব্রুনাই ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে শীর্ষ পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় ভ্রমণ সহযোগিতাসহ দূতাবাসের বিভিন্ন কর্মসূচির ওপর আলোকপাত করেন।
এ ছাড়াও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশ থেকে আগত আনিসুল ইসলাম হিরুর নেতৃত্বে পরিচালিত সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার এবং সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী স্বপ্নিল সজিব উপস্থিত অতিথিরা সাংস্কৃতিক দলের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে ব্রুনাইয়ে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কুটনীতিক, ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্রসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় চারশত আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
উল্লেখ্য, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ২৯ এবং ৩০ মার্চ আরও ২টি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার নেতৃত্বে নৃত্যসহ সংগীত পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী স্বপ্নিল সজিব ও সোমনুর মনির কোনাল।
এমআরএম/এমকেএইচ