জাতীয়

মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা

বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের এফআর টাওয়ারে লাগা অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই ভবনটিতে আটকে পড়া বিপদগ্রস্ত মানুষদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে আশপাশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আটকে পড়াদের মধ্যে কেউ ওদের স্বজন নয়। কিন্তু বনানী এলাকায় অবস্থিত প্রাইম এশিয়া, সাউথ ইস্ট, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থী মানবিক হৃদয় নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

Advertisement

প্রথম থেকেই ওরা কোথায় কে আটকে পড়েছে, ভবনটির কোন তলায় আগুন বেশি, আশপাশের কোনো ভবন থেকে দ্রুত পানি এনে আগুন নেভানো যাবে- এসব ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের সহযোগিতা করছেন।

ভবন থেকে প্রাণভয়ে লাফিয়ে পড়ে আহত ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় উদ্ধার করা লোকজনকে পানি খাওয়ানো, কোলে করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর বিষয়টি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

মধ্য বাড্ডার বাসিন্দা এইউআইবি’র কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকি জানান, বাসায় টেলিভিশনে আগুনের দৃশ্য ও আটকে পড়া মানুষগুলোর প্রাণ বাঁচানোর জন্য আকুতি দেখে কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তিনি। সম্পর্কে কেউ না হলেও সবাই মানুষ- এ ফিলিংস থেকেই উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করেন তারা।

Advertisement

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে অগ্নিনির্বাপণ কোর্স করানো হয়েছে। তবে তাদের সরাসরি ফায়ার ফাইটার না বলা গেলেও মানবিক ফাইটার নামে অভিহিত করা যায়। শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নন, অসংখ্য সাধারণ মানুষও আগুন নেভানোর কাজে নানাভাবে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে বলেও তিনি জানান।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে এফআর টাওয়ারের ৯ তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। আগুন নেভাতে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট কাজ করলেও বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

ভবনে আটকা পড়াদের হেলিকপ্টার ও ১২তলায় ফায়ার সার্ভিসের মই দিয়ে উদ্ধার করা হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অর্ধশতাধিক জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করাদের মধ্য থেকে অনেককে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

পিডি/এমবিআর/পিআর

Advertisement