আইন-আদালত

আবরারকে চাপা দেয়ার আগে মালিক-কনডাক্টরের কথোপকথন

রাজধানীর শাহজাদপুরে আবরার আহাম্মেদ চৌধুরীকে চাপা দেয়ার আগে মিরপুর আইডিয়াল গার্লস ল্যাবরেটরি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সিনথীয়া সুলতানাকে চাপা দিয়ে গুরুতর জখম করে সু-প্রভাত বাসটি। এরপর বাসের যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে চালক সিরাজুল ইসলামকে আটক করে ট্রাফিক পুলিশে সোপর্দ করে।

Advertisement

এ সময় উপস্থিত জনতা বাসের ক্ষতি করতে পারে- এমন আশঙ্কায় বাসমালিক ননী গোপালকে ফোন করে কনডাক্টর ইয়াছিন আরাফাত দুর্ঘটনার কথা জানান। কনডাক্টর মালিকের কাছে জানতে চান এখন তারা কী করব? মালিক তখন বলেন, গাড়িতে যেহেতু কোনো যাত্রী নেই সেহেতু গাড়িটি যে কোনো জায়গায় রাখ। মালিকের নির্দেশে কনডাক্টর ইয়াছিন বাসটি দ্রুত চালাতে থাকে। এ সময় তার মাথা ঠিক ছিল না। নর্দ্দা পার হতেই বিইউপি শিক্ষার্থী আবরারকে চাপা দিয়ে তার মাথা থেঁতলে দেয়।

বুধবার মালিক ও কনডাক্টরের মধ্যে মুঠোফোনে কথোপকথনের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ধরনের কথোপকথনের রেকর্ড উদ্ধার করেছি।

তিনি আরও বলেন, হত্যার মূলহোতা কনডাক্টর ইয়াছিন আরাফাত। তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।

Advertisement

বুধবার আহাম্মেদ চৌধুরী নিহত হওয়ার ঘটনায় সু-প্রভাত বাসের কনডাক্টর ইয়াছিন আরাফাত ও হেলপার ইব্রাহিমকে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রিমান্ড শুনানির আগে কনডাক্টর ইয়াছিন আরাফাত বলেন, মালিকের নির্দেশ পেয়ে আমি দ্রুত গাড়ি চালাতে থাকি। এ সময় আমার মাথা ঠিক ছিল না। আমার মনের মধ্যে তখন ভয় কাজ করতে ছিল।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দিবাগত রাতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার সুচিপাড়ার মিজানের ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে কনডাক্টর ইয়াছিন আরাফাত ও তার দেয়া তথ্যানুযায়ী বুধবার সকালে রাজধানীর মধ্য বাড্ডা এলাকা থেকে হেলপার ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করা হয়।

২০ এপ্রিল সু-প্রভাত বাসের চালক সিরাজুল ইসলামের (২৪) বিরুদ্ধে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

Advertisement

উল্লেখ্য, ১৯ মার্চ সকাল ৭টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন প্রগতি সরণি এলাকায় সু-প্রভাত (ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৪১৩৫) বাসের চাপায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহাম্মেদ চৌধুরী নিহত হন।

এদিন দিবাগত রাতে নিহত আবরারের বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহাম্মেদ চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় বাসের চালক সিরাজুল ইসলাম, তার সহকারী, কন্ডাক্টর ও মালিককে। মামলার ধারা পেনাল কোডের ২৭৯/ ৩৩৮ (ক)/৩০৪/ ও ১০৯ । মামলা নং ৩০।

২০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২২ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।

জেএ/জেএইচ/পিআর