নেত্রকোনার পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে রায় বৃহস্পতিবার

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার শেখ মো. আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মাওলানাসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য আগামীকাল (২৮ মার্চ) দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

মামলার অপর চার আসামি হলেন- মো. আব্দুল খালেক তালুকদার, মো. কবির খান, আব্দুস সালাম বেগ ও নুরউদ্দিন। এদের সবাই বর্তমানে পলাতক আছেন।

বুধবার (২৭ মার্চ) বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায়ের এ দিন নির্ধারণ করেন। এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি এ মামলাটি যে কোনো দিন রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালে সরকারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নি। অপরদিকে আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।

এই মামলার মোট আসামি ছিলেন সাতজন। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মারা যান আহাম্মদ আলী (৭৮)। আর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় মারা যান আরেক আসামি আব্দুর রহমান।

আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুর একটায় রাজাকার বাহিনী নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীতে মরদেহ ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগে মামলা রয়েছে। শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আ. কাদির বাদী হয়ে ২০১৩ সালে চার রাজাকারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্তে আরও তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় মোট আসামি হন সাতজন।

মামলায় আব্দুল কাদির অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত তার বড় ভাই আব্দুল হেকিম ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছিলেন। রাজাকাররা এ খবর জানতে পেরে তাদের বাড়িতে গিয়ে বড় ভাই আব্দুল খালেককে পিঠমোড়া করে বেঁধে মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের সন্ধান জানতে চান।

ভাইদের কোনো সন্ধান না দেয়ায় তখন রাজাকার বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ঘরে লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করে। পরে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভাই খালেককে ধরে নিয়ে গিয়ে জারিয়া রাজাকার ক্যাম্পে দুই দিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরদিন ২১ আগস্ট তাকে জারিয়া কংশ নদীর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে নদীতে মরদেহ ভাসিয়ে দেন রাজাকাররা।

এফএইচ/এমএমজেড/এমকেএইচ