প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করা, কৃষি-অকৃষি পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো এবং বাজারে সহজে পণ্য পৌঁছাতে উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে ৩৪০টি সেতু নির্মাণ করা হবে। সারাদেশের ৮ বিভাগের ৬১ জেলার ২৫৭টি উপজেলায় এসব সেতু নির্মাণ করা হবে। সেতুর আকার ১০০ মিটারের বেশি হবে না।
Advertisement
১০০ মিটারের নিচে সেতুগুলো নির্মাণ করতে ‘উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়কে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ’ শিরোনামে প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি ৮৩ লাখ ৭ হাজার টাকা। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।
প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে সুপারিশও করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশে বলা হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলা সড়কে সেতু নির্মাণ হবে ৫১টি, যার পরিমাণ হবে ৩ হাজার ৮১৬ মিটার। ইউনিয়ন সড়কে ব্রিজ নির্মাণ হবে ৬৯টি, যার পরিমাণ হবে ৪ হাজার ৪৬৭টি। গ্রাম সড়কে ব্রিজ নির্মাণ হবে ২২০টি, যার পরিমাণ হবে ১১ হাজার ৮০৩ মিটার। সেতুর অ্যাপ্রোচ ও অ্যাকসেস সড়ক উন্নয়ন করা হবে ১০০ কিলোমিটার।
Advertisement
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের বিষয়ে গত বছরের ১৪ নভেম্বর পিইসির সভা হয়। সভায় প্রকল্পটির জন্য মোট ১৯ কোটি ৮৩ লাখ ৭ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের অগ্রাধিকার বিবেচনা করে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এডিপির নতুন অনুমোদিত প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। তবে প্রকল্পটির ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়নি।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় জানায়, দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করা, কৃষি-অকৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দেশব্যাপী পণ্য বাজারজাতকরণ সহজতর ও পরিবহণ ব্যয় কমবে। সামগ্রিকভাবে দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও দারিদ্র্যতা কমবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৮টি বিভাগের ৬১ জেলার ২৫৭টি উপজেলায় ৩৪০টি সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে, সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে দুই হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে বলা হয়, সারা দেশে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণের ফলে উন্নত সড়ক যোগাযোগ ও কানেকটিভিটি তৈরি হবে। কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হবে বিধায় প্রকল্পটি অনুমোদন যোগ্য।
Advertisement
সুপারিশে আরও বলা হয়, প্রস্তাব করা হয়েছে প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের বাস্তবায়নের মেয়াদ কয়েক মাস অতিবাহিত হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা যেতে পারে। এই মেয়াদে প্রকল্পটি একনেক সভায় বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করা হল।
পিডি/এমএসএইচ/জেআইএম