দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদন্নোতির ক্ষেত্রে চাকরির বিধিমালা লঙ্ঘন সংক্রান্ত কোনো অনিয়ম করা হলে ব্যবস্থা নেবে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
Advertisement
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেছেন, ডিএসইতে চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি দেয়া হলে এবং সেই বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্প্রতি ২০১৭-১৮ সালের কাজের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। তবে কেপিআই (কি পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর) ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার পরও বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বঞ্চিত হয়েছে।
সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তদের বঞ্চিত করার পাশাপাশি কোটাভিত্তিক পদোন্নতিতেও অনিয়ম করা হয়েছে। ডিএসইর কোটা ভিত্তিক পদোন্নতির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, একটি ডিপার্টমেন্ট থেকে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ উদোন্নতি পাবেন। তবে সম্প্রতি দেয়া পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো ডিপার্টমেন্টে পাঁচজনের মধ্যে দুইজন, কোথাও সাতজনে তিনজন, আবার কোনো ডিপার্টমেন্টে ১২ জনের মধ্যে মাত্র একজনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।
Advertisement
পদন্নোতির ক্ষেত্রে এমন অনিয়ম করায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ বিরাজ করছে। এ বিষয়ে গত ২০ মার্চ জাগো নিউজে ‘যোগ্যরা বঞ্চিত, ডিএসইর কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদ প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে উঠে আসে যোগ্যরা বঞ্চিত হলেও অবৈধ শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকা এবং ডিএসই এফডিআর ফান্ডের টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ ওঠা কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়েছে।
এসব তথ্য তুলে ধরে ডিএসইর পদোন্নতি অনিয়মের বিষয়ে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসইসির অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘ডিএসইর চাকরি বিধিমালার বিষয়ে আমাদের একটি কমিটি গঠন হয়েছে। আর ডিএসই হলো একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। পদোন্নতির বিষয় একান্তই তাদের বিষয়। তবে পদোন্নতির ক্ষেত্রে যদি চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করা হয় এবং সে বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকে লিখিত আকারে অভিযোগ আসে, কমিশন অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
তিনি বলেন, ডিএসইর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কাঠামো বা উদোন্নতি তাদের বোর্ডের ব্যাপার। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের যে রুলস, রেজুলেশন হয় তাতে কমিশন অনুমোদন দিয়ে থাকে। আমাদের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তারা ওই বিষয় নিয়ে কাজ করছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জনা গেছে, বিএসইসির ডেপুটি ডিরেক্টর আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ইতোমধ্যে ডিএসইর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে। বৈঠকে ডিএসইর কর্মকর্তারা চাকরি বিধিমালা করে দেয়ার পাশাপাশি প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তার পদ দুটি চুক্তি ভিক্তিক করার দাবি জানান।
Advertisement
অপরদিকে বিএসইসির প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে ডিএসইর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলা হয়, যদি কোনো অভিযোগ অথবা মতামত আপনারা এখানে (বৈঠকে) উল্লেখ করতে ভয় পান তাহলে আমাদের ই-মেইল করেও জানাতে পারেন। এসময় বিএসইসির দুই কর্মকর্তা তাদের ই-মেইল ঠিকানা ডিএসইর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে আসেন। এরপর ডিএসইর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বিএসইসির ওই দুই কর্মকর্তার ই-মেইলে একাধিক লিখিতি অভিযোগ জানানো হয়েছে।
এমএএস/এমবিআর/এমকেএইচ