জাতীয়

লাল-সবুজকে ধারণ করে পালিত হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস

স্বাধীনতার ৪৮ বছর পূর্তি উদযাপন করছে লাল-সবুজের অদম্য বাংলাদেশ। দেশবাসী প্রিয় এই দুই রঙকে ধারণ করে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতি দেখাচ্ছে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও অশেষ শ্রদ্ধা। পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী ও রাষ্ট্রের কাছ থেকে যারা জীবন, সম্ভ্রম, সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে স্বাধীনতা উপহার দিয়েছেন তাদের স্মরণ করছেন সমগ্র জাতি। তাই দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভবনে দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা ছাড়াও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। চলছে বিভিন্ন সংগঠনের নানা কর্মসূচি। 

Advertisement

দিনটি সরকারি ছুটি হওয়ায় অনেকেই বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে উপভোগ করেছেন। আবার কেউ কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে বাসা-বাড়িতেই সময় কাটাচ্ছেন। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন এবং রেডিওতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করেছে পত্রিকাগুলো। 

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সকালেই সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি। এর পর পরই পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তারা চলে যাবার পর সেখানে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। হাতে হাতে দেখা যায় লাল-সবুজ পতাকা। কারো কারো পোষাকেও লাল-সবুজে মাখামাখি। 

দিবসটি উপলক্ষে সকালে শিশু-কিশোর সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা শিক্ষার্থীরা মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে পরিবেশনার মাধ্যমে দেশের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রা তুলে ধরেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি প্রচারিত তাদের নানান শারীরিক কসরতে মুগ্ধ হন দেশবাসী। বিকেল তিনটায় রাজধানীর হাতিরঝিলে নৌকাবাইচের আয়োজন করা হয়েছে। 

Advertisement

এছাড়া ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে বর্বর পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত শহীদদের স্মরণে বগুড়ায় আয়োজন করা হয়েছিল ব্যতিক্রমী আলোক প্রজ্বলন। ‘লাখো শহীদের স্মরণে লাখো প্রদীপ জ্বালো’ শিরোনামে এই অনুষ্ঠানে বগুড়া জেলা শহর ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ের হাজারো জনতা অংশ নেন। বগুড়া জেলা পুলিশ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, জেলার বিভিন্ন পেশাজীবী ও শ্রমজীবী সংগঠন যৌথভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

স্বাধীনতা দিবসের দিনে প্রখর রোদও দমিয়ে রাখতে পারেনি বাঙালিদের। তীব্র গরমের মধ্যেই শাহবাগ কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির সামনে একদল সংগীত শিল্পীকে ট্রাকে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান গাইতে দেখা যায়। ঢোল, তবলা, বাঁশি, হারমোনিয়ামসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সুরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিল্পীরা একের পর এক দেশাত্মবোধক গান গেয়েই চলছেন। সেই গান শুনতে স্থানটিতে দর্শক-শ্রোতাদের ভিড় দেখা গেছে। 

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে লক্ষ্য করে প্রথম বুলেট ছুঁড়েছিলেন রাজারবাগের সাহসী পুলিশ সদস্যরা। যা ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ। এদিন প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে শহীদ হন অনেক পুলিশ সদস্য। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শহীদ পুলিশ সদস্যদের সম্মানে রাজারবাগে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গভবনে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। দিবসটি উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া ডাক অধিদফতরের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে গণভবনে। 

Advertisement

এইচএস/এমএমজেড/পিআর