ম্যাচের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হতে পারতো ক্রিস গেইলের তাণ্ডবলীলা কিংবা জবাবে জশ বাটলারের নান্দনিক ইনিংস। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের অধিনায়ক রবিচন্দ্রন অশ্বিনের করা ম্যানকাডিং আউটকে ঘিরে।
Advertisement
তবে সমালোচনা বা নিন্দা যাই হোক না কেন, দিন শেষে জয়ী দলের নাম অশ্বিনের পাঞ্জাবই। রাজস্থান রয়্যালসকে ১৪ রানে হারিয়ে নতুন মৌসুম শুরু করলো প্রীতি জিনতার দল। আগে ব্যাট করে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রান করেছিল পাঞ্জাব। জবাবে ৯ উইকেটে ১৭০ রানে থামে রাজস্থানের ইনিংস।
রান তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে দুর্দান্ত সূচনা পায় রাজস্থান। প্রথম পাওয়ার প্লে’তে ওভারপ্রতি ১০ গড়ে ৬০ রান তোলেন দুই ওপেনার আজিঙ্কা রাহানে এবং জশ বাটলার। ইনিংসের নবম ওভারে দলীয় ৭৮ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন রাহানে।
তবে দলের জয়ের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন বাটলার। তুলে নেন আসরে নিজের প্রথম ফিফটিও। কিন্তু ইনিংসের ১৩তম ওভারে পাঞ্জাবের অধিনায়ক রবিচন্দ্রন অশ্বিন তাকে ম্যানকাডিং আউট করলে থামে ৪৩ বলে ৬৯ রানের লড়াকু ইনিংস।
Advertisement
ম্যানকাডিং আউট বলতে বোঝায় বোলার যখন বোলিংয়ের জন্য পপিং ক্রিজের মধ্যে আসেন, তখন তিনি হাত ঘোরানোর আগেই যদি ব্যাটসম্যান দাগের বাইরে বেরিয়ে যান তাহলে বোলার চাইলে রান আউট করতে পারেন। এ আইনের সুবিধা নিয়ে বাটলারকে ফেরান অশ্বিন।
এটা ক্রিকেটে এখন আর হয় না। ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপে কোটনি ওয়ালশ পাকিস্তানের শেষ ব্যাটসম্যান সেলিম জাফরকে অঅউট না করে বিশ্ব নন্দিত হয়েছিলেন আর এবার অশ্বিন হলেন নিন্দিত, সমালোচিত।
দলীয় ১০৮ রানে ডাগআউটে ফেরত যান বাটলার। তৃতীয় উইকেটে সামলে নেন সাঞ্জু স্যামসন এবং স্টিভেন স্মিথ। দুজন মিলে গড়েন ৪০ রানের জুটি। কিন্তু স্যাম কুরানের করা ১৭ এবং মুজিবউর রহমানের করা ১৮তম ওভারেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় রাজস্থান।
Advertisement
১৭তম ওভারে দুই সেট ব্যাটসম্যান স্যামসন (৩০) ও স্মিথকে (২০) ফেরান কুরান। পরের ওভারে বেন স্টোকস এবং রাহুল ত্রিপাথিকে আউট করে পাঞ্জাবের জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন মুজিব। এ দুই ওভারে মাত্র ১২ রান খরচ করেন মুজিব এবং কুরান।
শেষের ১২ বলে ২৭ রান বাকি থাকে জয়ের জন্য। মোহাম্মদ শামি ১৯তম ওভারে দেন মাত্র ৬ রান। শেষ ওভারে অঙ্কিত রাজপুত পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে জাগিয়েছিলেন আসরের প্রথম হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। সেটি না হলেও শেষ ওভারে মাত্র ৬ রান খরচ করে ১৪ রানের জয় নিশ্চিত করেন ভারতীয় এ পেসার।
এর আগে এবারের আইপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচেই ভয়ংকর চেহারায় হাজির হন পাঞ্জাবের ক্যারিবীয় ওপেনার ক্রিস গেইল। ৪৭ বলে ৭৯ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। জয়পুরে গেইলের এই ইনিংসে ভর করেই কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব গড়েছে বড় পুঁজি। ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ তারা তুলেছে রান।
ইনিংসের শুরুতেই লোকেশ রাহুলকে (৪) হারিয়ে ধাক্কা খেয়েছিল পাঞ্জাব। এরপর মায়াঙ্ক আগারওয়েলও ২২ রানের বেশি এগোতে পারেননি। তবে একটা প্রান্ত ধরে নিজের বিধ্বংসী ব্যাটিংটা চালিয়ে গেছেন গেইল।
৪৭ বলে ৮ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় ৭৯ রানে থাকার সময় বেন স্টোকসের শিকার হয়েছেন গেইল। যে বলটি আরেকটু হলে বাউন্ডারি পার হয়ে যেতো। গেইল ফেরার পর হাল ধরেন সরফরাজ খান। ২৯ বলে ৬ চার আর ১ ছক্কায় হার না মানা ৪৬ রানের ইনিংসে পাঞ্জাবকে লড়াকু পুঁজি পর্যন্ত নিয়ে গেছেন এই ব্যাটসম্যান।
রাজস্থানের পক্ষে ২টি উইকেট নিলেও ৪৮ রান খরচ করেন বেন স্টোকস। একটি করে উইকেট নেন ধাওয়ান কুলকার্নি আর গৌতম।
এসএএস/বিএ