রাজনীতি

সঞ্চালনায় সাবেক শিবির সভাপতি, বক্তব্যে ড. কামাল

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত নেতা মজিবুর রহমান মঞ্জুর সঞ্চালনায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগ থেকেই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির বিরোধিতা করে আসছিলেন তিনি।

Advertisement

ওই অনুষ্ঠানে বামপন্থী সংগঠন বাসদের (বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামানসহ অন্য সংগঠনের নেতারাও বক্তব্য রাখেন।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি, জামায়াতের ঢাকা মহানগর মজলিসে শূরার সদস্য মজিবুর রহমান মঞ্জুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে রাজনীতি করে আসছেন ড. কামাল হোসেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জামায়াত ইস্যুতে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয় ড. কামাল হোসেন গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে। পরে জামায়াত নেতারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নেন।

Advertisement

সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় আহত ও নিহতদের প্রতি শোক এবং সংহতি শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা অংশ নেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করার জন্য হিংসা করা উচিত নয়। রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার করা যাবে না। মানুষের মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে কোনো বৈষম্য করা যায় না। এটা সারা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে। বৈষম্য হলো নীতি, ঐতিহ্য ও ধর্মের পরিপন্থী। এ মূল্যবোধ জাগ্রত করেই এবারের স্বাধীনতা দিবস পালনের আহ্বান জানান তিনি।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থেকে অনেক কিছু শেখার আছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশেও অনেক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মী গুম খুনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু কাউকে লজ্জিত হতে দেখা যায়নি।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ধর্ম যখন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হয়, তখনই তা মানবতাবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়।

Advertisement

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের ঠিক একটা বিপরীত জগতে আমরা বসবাস করছি। আমরা মানবতার চাষ করি না, হিংসার চাষ করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্র ও রাজনীতির মধ্যে ধর্ম আনা যাবে না।’

বাংলাদেশে কোনো ঘটনা ঘটলেই ঘৃণা ও বিভাজন ছড়িয়ে দেয়া হয় বলে উল্লেখ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, মতবিরোধ, সমালোচনা থাকবে কিন্তু বিভাজন দূর করে রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করতে জেসিন্ডা নতুন দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন।

আলোচনা সভায় জেসিন্ডাকে ‘প্রকৃত মানবতার মা’ উপাধি দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, বর্বরোচিত হামলার মাধ্যমে হামলাকারী যে অন্ধকার ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে, তা প্রতিরোধ করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও সাধারণ মানুষ।

সভায় সূচনা বক্তব্য দেন কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, সাবেক সচিব মোফাজ্জল করিম চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী প্রমুখ।

এএসএস/জেএইচ/জেআইএম