দেশজুড়ে

শরীয়তপুরে আট যুবকের বাড়িতে শোকের মাতম

গত বৃহস্পতিবার ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়া উপকূলে ট্রলার ডুবির ঘটনায় শরীয়তপুরের আট যুবক নিখোঁজ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। ট্রলার ডুবির খবর পাওয়ার পর থেকে তাদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা কোনো রকম যোগাযোগ করতে পারছেন না।নড়িয়া উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের কাজির শুকুর গ্রামের জাকির হোসেন কাজি (৪০) চার বছর আগে কাজের সন্ধানে মিশর যান। সেখানে ভালো কাজ না পাওয়ায় দুই বছর আগে লিবিয়ার বেনগাজি শহরে পাড়ি জমান তিনি।ইয়াকুব হাওলাদার (২২) ও বিল্লাল দেওয়ান (২৪) নামে তার স্ত্রীর ভাইয়ের দুই ছেলে লিবিয়া একই শহরে থাকতেন। তাদের নিয়ে গত বুধবার ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে ট্রলার ছেড়ে যাওয়ার আগে তাদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের কথা হয়। এর পর থেকে তাদের আর কোনো খবর পায়নি পরিবারের সদস্যরা।এছাড়া শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভুমখারা গ্রামের নান্নু ঢালীর পুত্র সুমন ঢালী (২৫), রাহাপাড়া গ্রামের হারুন বেপারীর পুত্র সুমন বেপারী ( ২৭) ও বাংলা বাজার গ্রামের সোলায়মান হোসেনের পুত্র জসিম উদ্দিন (৩০) ওই ট্রলারের যাত্রী ছিল। ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর থেকে পরিবারের সদস্যরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।এছাড়া স্বপন ও আজাদ নামের দুই যুবক নিখোঁজ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। গণমাধ্যমে জাকিরের নিহত হওয়ার খবর শোনার পর থেকে তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।রোববার সরেজমিনে জাকির হোসেন কাজির গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, স্ত্রী মনতারা বেগম মাটিতে গড়াগড়ি করছেন। স্বজনের কান্না আর আহাজারিতে সমস্ত বাড়ি ভারী হয়ে উঠেছে। সমবেদনা জানাতে গ্রামের মানুষ ছুটে এসেছেন তাদের বাড়িতে।কান্নাজরিত কণ্ঠে জাকির হোসেন কাজির স্ত্রী মনতারা বেগম বলেন, একটু সুখের আশায় ধার দেনা করে তাকে (জাকির হোসেন কাজি) বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। চার বছর পার হয়ে গেলও ঋণের টাকা শোধ করতে পারিনি। ছেলে মেয়ে নিয়ে খেয়ে দিন পার করছিলাম। এ আমার কী হয়ে গেল? আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। সরকারের কাছে দাবি তার সন্তানদের বাবার লাশটুকু জেন দেশে আনা হয়।সন্তানদের খোঁজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিখোঁজের স্বজনরা। রাহাপাড়া গ্রামের নিখোঁজ সুমন বেপারীর বাবা হারুন বেপারী বলেন, পাঁচ লাখ টাকা ঋণ করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। ট্রলারে ওঠার আগে ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখন তার কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমরা এখন কী করবো?এব্যপারে  শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাস যানান, লিবিয়া নৌকা ডুবিতে নিহতদের মধ্যে শরীয়তপুরের চার জনের নাম গণমাধ্যমে শুনেছি। এখনো অফিসিয়ালভাবে আমাদেরকে কিছু জানানো হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে নিখোঁজ বা নিহতদের সম্পর্কে কিছু জানানো হলে আমরা খোঁজ নেবে।ছগির হোসেন/বিএ

Advertisement