জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীকে চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে দুই কানেরই পর্দা ফাটিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। মারধরের শিকার মো. আরাফাত হোসেন এ ঘটনার বিচার চেয়ে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।মো. আরাফাত হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৪৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র।অভিযোগ পত্রে মো. আরাফাত হোসেন বলেন , ‘১৯ আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ১২৯ ও ১৩০ নম্বর কক্ষ থেকে আমার একটিসহ মোট তিনটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। পরে এ ঘটনার জন্য আমাকেই সন্দেহ করা হয়। পরে এ বিষয়ে সমাধানের জন্য ২৩ তারিখ রাত ২টায় মিটিং ডাকা হয়। মিটিংয়ে আবারো আমাকে দোষারোপ করা হয়’।এরপর আমাকে প্রথমে হলের মাঠে, পরে ছাদে নিয়ে বিষয়টি স্বীকার করার জন্য চাপ দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু আমি চুরি করিনি জানালে ছাত্রলীগ কর্মী ফিরোজ মাহমুদ দু’কানে সজোরে থাপ্পড় দেয়। এতে আমি মেঝেতে লুটিয়ে পড়ি।-অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন আরাফাত।অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, আরাফাতকে ছাদ থেকে হলের ১২৯ নম্বর কক্ষে এনে জামিনুর রহমান, লিটন, আরাফাত হোসেন শোভন, ওয়াদুদ হাসান মিঠু এবং সৌরভ বসুসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী বেধড়ক মারধর করে। পরে কানে ও গায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করলেও ডাক্তারের কাছে যেতে দেয়া হয়নি তাকে। অভিযুক্তরা সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী।মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থী বারডেম জেনারেল হাসপাতালের নাক-কান-গলা ও হেড-নেক সার্জানি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. বাধন কুমার দে’র অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।এ বিষয়ে আরাফাতের বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার বলেছেন, তার দুটি কানের পর্দাই ফেটে গেছে। তার সুস্থ হতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন।’এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামিনুর রহমান বলেন, ‘চর-থাপ্পড় মেরেছি। তবে এতো বেশি মারধর করা হয়নি।’ এ ঘটনায় অন্যদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা তাদের ফোনে পাওয়া যায়নি।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, অভিযোগপত্র পেয়েছি। তবে ঘটনাটি হলের অভ্যন্তরে হওয়ায় সোমবার হল প্রাধ্যক্ষকে অভিযোগপত্রটি প্রেরণ করা হবে। তিনি (প্রাধ্যক্ষ) এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে আমাদের জানালে ব্যবস্থা নিব।’হাফিজুর রহমান/একে/আরআইপি
Advertisement