প্রবাস

পোল্যান্ড দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পালন ২৫ মার্চ

বাংলাদেশ দূতাবাস পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারস প্রাঙ্গণে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করা হবে আগামী ২৫ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায়। ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে দিবাগত রাত থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীদের ‘নৃশংস গণহত্যা’র স্মরণে দিবসটি পালন করা হবে।

Advertisement

এ অনুষ্ঠানে বাণী পাঠ ও রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের পর বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘স্টপ জেনোসাইড’ প্রদর্শিত হবে। অনুষ্ঠানে পোল্যান্ড বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন দূতাবাসের প্রথম সচিব অর্নিবান নিয়োগী।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এইদিনে বাঙালি জাতির জীবনে এক বিভিষিকাময় রাত নেমে আসে। মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কাপুরুষের মতো তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকসা অনুযায়ী আন্দোলনরত বাঙালিদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

পাকিস্তানি শাসকদের এই সিদ্ধান্তের কারণে দৈনিক গড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ খুন হয় সারা দেশে। এজন্য ১৯৭১ সালে মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সরাসরি গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন।

Advertisement

‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এ বাংলাদেশের হত্যাযজ্ঞকে বিশ শতকের পাঁচটি ভয়ংকর গণহত্যার অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিরাপত্তাবিষয়ক আর্কাইভ’ তাদের অবমুক্তকৃত দলিল প্রকাশ করে। সেখানে বাংলাদেশের নারকীয় হত্যালীলাকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন কূটনৈতিকরা সে সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্যাপক গণহত্যার বর্ণনা দিয়ে ওয়াশিংটনে বার্তা প্রেরণ করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা একাধিক লেখায় এবং বিশ্বখ্যাত পত্রিকা টাইম, নিউইয়র্ক টাইমস প্রভৃতির সম্পাদকীয়তে পাকিস্তানিদের গণহত্যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়।

উপরন্তু ১৯৭২ সালে পাকিস্তানে গঠিত ‘হামাদুর রহমান কমিশন’ তাদের পরাজয় অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রমাণ পায়, বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাদের ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও নারী নির্যাতনে ঘটনার। আর এই ভয়ংকর গণহত্যায় কেঁপে উঠেছিল বিশ্ববিবেক। জর্জ হ্যারিসন ও পণ্ডিত রবিশংকর ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ আয়োজন করেন।

দার্শনিক আঁদ্রে মালরোর নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘আন্তর্জাতিক ব্রিগেড’। প্যারিস ও লন্ডনে সরব হয়ে ওঠেন মানবতাবাদী নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা ব্যাপক এবং নিষ্ঠুরতার দলিল হিসেবে আজও বিশ্বকে নাড়া দেয়।

Advertisement

এমআরএম/এমকেএইচ