স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক হিসাবরক্ষক আলোচিত আফজাল হোসেনের আরেক সহযোগীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে।
Advertisement
সম্প্রতি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং কর্মকর্তারা এ অভিযোগ দাখিল করেছেন দুদকের মহাপরিচালক বরাবরে। অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক প্রধান সহকারী (বর্তমানে গোপালঞ্জে চাকরিরত) ওবায়দুর রহমান চাকরির শুরুতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের স্টোরকিপার হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবরক্ষক আফজালের ঘনিষ্ট হওয়ার সুবাদে তিনি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ডাক্তার ও কর্মচারীদের বদলি বাণিজ্য, পদোন্নতি দিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
এরই মাঝে নিজের পদ পদবি বাড়িয়ে নেন। ২০০৬ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ওবায়দুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এসময় তাকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক পদে বদলি করা হয়। পরবর্তীতে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে তিনি ফের প্রধান সহকারী হিসেবে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। এখানে আসার পর ওবায়দুর রহমান ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
Advertisement
এছাড়াও তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দুর্নীতি, মালামাল ক্রয়ে দুর্নীতি, মেডিকেল কলেজের কর্মচারী বদলি, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেন বিপুল পরিমাণ টাকা।
অভিযোগ রয়েছে, ফরিদপুর শহরের লক্ষীপুর এলাকায় ৩০ শতাংশ জমির ওপর ৫তলা ফাউন্ডেশনের তিন ইউনিটের একটি বাড়ি রয়েছে। রয়েছে একটি এলিয়েন গাড়ি, ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় নামে বেনামে রয়েছে একাধিক ফ্লাট ও প্লট। শহরের পশ্চিম খাবাসপুর, হাড়োকান্দি এবং গ্রামের বাড়িতে রয়েছে আলিশান বাড়ি ও শত শত বিঘা জমি।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী জানান, ওবায়দুর রহমান একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করেছেন শুধুমাত্র দুর্নীতির মাধ্যমে। তারা জানান, দুর্নীতির মাধ্যমে আফজাল যেমনি কয়েকশ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তেমনি আফজালের ছত্রছায়ায় থেকে ওবায়দুর রহমান কয়েক কোটি টাকার মালিক বনেছেন।
তার দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে বলেও জানান তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওবায়দুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি কমিশন দুদক।
Advertisement
বি কে সিকদার সজল/এমএএস/পিআর