খেলাধুলা

এবার বিশ্বকাপে থাকছে না কোনো ইংলিশ ‘স্পেশালিস্ট’ কোচ

বাংলাদেশ এর আগে যতবারই দেশের বাইরে বিশ্বকাপ খেলতে গেছে, প্রায় প্রতিবারই অন্তত একজন স্পেশালিস্ট কোচ, খণ্ডকালীন কনসালটেন্ট কিংবা টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

Advertisement

১৯৯৯ সালে এই ইংল্যান্ডেই প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ দলের স্পিন কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও তুখোড় অলরাউন্ডার (মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ও লেগস্পিনার) মোশতাক মোহাম্মদ এবং সে দেশের সাবেক এক পেসারকে।

ইংল্যান্ডের মাটিতে গিয়ে একজন পাকিস্তানিকে খণ্ডকালীন স্পিন বোলিং কোচ নিয়োগ দেয়া হয়েছিল কেন? নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করছে? তাহলে শুনুন, মোশতাক মোহাম্মদ ও তার ছোট ভাই সাদেক মোহাম্মদ (দুজনই ক্রিকেটের অসামান্য ব্যাটিং প্রতিভা হানিফ মোহাম্মদের ছোট ভাই) সে সময় ইংল্যান্ডেই স্থায়ীভাবে বাস করতেন।

মোশতাক মোহাম্মদ নর্দাম্পটনশায়ারের হয়ে দীর্ঘ ১১ বছর (১৯৬৬ থেকে ১৯৭৭) ইংলিশ কাউন্টি খেলেছেন। ইংলিশ কন্ডিশনটা তার খুব ভালো জানা ও চেনা ছিল। তাই তাকেই স্পিন উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।

Advertisement

ইংলিশ কন্ডিশনে কীভাবে কোথায়, কোন লাইন ও লেন্থে বল ফেলতে হয়- ১৯৯৯’র বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তখনকার স্পিনার মোহাম্মদ রফিক, এনামুল হক মনি আর নাইমুর রহমান দুর্জয়কে তা হাতে-কলমে দেখানোর পাশাপাশি শিখিয়েছিলেন মোশতাক।

কিন্তু এবার আর বর্তমান কোচিং স্টাফের বাইরে আর কোন নতুন স্পেশালিস্ট কোচ, কনসালটেন্ট বা টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার নিয়োগ দেয়া হবে না। বিসিবি সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন, এবার আর কোনো নতুন খণ্ডকালীন স্পেশালিস্ট কোচ বা কনসালটেন্ট কিংবা টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার থাকবে না।

কেন? বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজনের ব্যাখ্যা, ‘নাহ এবার বিশ্বকাপকে সামনে রেখে কোন ইংলিশকে স্পেশালিস্ট কোচ, টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার কিংবা কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। আমরা আগে থেকে চিন্তা করেই একজন ইংলিশকে হেড কোচ পদে নিযুক্ত করেছি। ইংলিশ ওয়েদার, কন্ডিশন, পিচ-মাঠ সম্পর্কে যার ধারণা একদম স্বচ্ছ ও পরিষ্কার।

বাংলাদেশের বর্তমান হেড কোচ স্টিভ রোড যেহেতু একজন ইংরেজ এবং দীর্ঘদিন ইংলিশ কাউন্টি দল উর্স্টারশায়ারের কোচিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। কাজেই লর্ডস, ওভাল, কার্ডিফ বার্মিংহাম, ম্যানচেস্টার- কোন মাঠের পিচের কি চরিত্র- সবই তার জানা।

Advertisement

কাজেই ইংল্যান্ডে গিয়ে বিশ্বকাপের আগে আর নতুন কোনো টেকিনক্যাল এক্সপার্টের শরণাপন্ন হতে আগ্রহী নয় বিসিবি।

বলার অপেক্ষা রাখে না, এ মুহূর্তে বাংলাদেশের কোচিং স্টাফের মুল তিনজন হেড কোচ স্টিভ রোডস, ফাস্ট বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ এবং ব্যাটিং কোচ নেইল ম্যাকেঞ্জি তিনজনই ইংলিশ কন্ডিশন সম্পর্কে সম্যক অবগত। যাদের খেলোয়াড়ি জীবনের একটা বড় সময় কেটেছে কাউন্টি খেলে।

হেড কোচ স্টিভ রোডস কোচিং ক্যারিয়ার শুরুর আগে ইংলিশ নামী কাউন্টি দল ইয়র্কশায়ারের হয়ে ১৯৮১ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর খেলে ১৯৮৫ সালে যোগ দেন উর্স্টারশায়ারে। সেখানে ক্রিকেটার হিসেবে ছিলেন ২০০৪ সাল পর্যন্ত। তারপর একই ক্লাবের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের কোচ নিয়োগ হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি উর্স্টারশায়ারের কোচের দায়িত্বে ছিলেন।

এছাড়া টাইগারদের দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটিং কোচ নেইল ম্যাকেঞ্জিরও আছে নয় বছর কাউন্টি খেলার অভিজ্ঞতা। হ্যাম্পশায়ার, সমারসেট ও ডারহামের হয়ে কাউন্টি খেলেছেন এ প্রোটিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশও নামকরা কাউন্টি দল গ্লস্টারশায়ারের হয়ে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত টানা কাউন্টি খেলেছেন।

কাজেই ইংলিশ কন্ডিশনটা খুব ভাল জানা তাদের। হেড কোচ একজন ইংলিশ আর ব্যাটিং ও ফাস্ট বোলিং কোচ ইংলিশ না হলেও দীর্ঘদিন ইংলিশ কাউন্টি খেলেছেন। সে কারণেই বিসিবি এবার আর নতুন করে কোন নতুন ইংলিশকে খণ্ডকালীন কোচ নিয়োগ দিচ্ছে না।

এআরবি/এসএএস/এমকেএইচ