নাট্য নির্মাতা হিমু আকরাম। ‘বিদেশি পাড়া’, ‘কঙ্কাবতীর চিঠি’, ‘নজিরবিহীন নজর আলী’, ‘নূর আলমের ক্যাসেট’, ‘হ্যালো মিস্টার স্যাম', 'জলছাপ', 'টিপু সুলতানের হাতি' -এর মতো দর্শকপ্রিয় নাটক উপহার দিয়েছেন তিনি।
Advertisement
সর্বশেষ তার রচিত ও পরিচালিত ‘চম্পাকলি টকিজ’ নাটকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভিতে প্রচারিত হয়ে প্রশংসিত হয়েছে।
দীর্ঘ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। সম্প্রতি দেশটির নাগরিকত্বও পেয়েছেন। কিছুদিন আগে ঢাকায় ফিরেছেন এই নির্মাতা। যুক্তরাষ্ট্রে বসেই তিনি রচনা করেছেন দীর্ঘ একটি ধারাবাহিক নাটক। যার নাম ‘শান্তি মলম ১০ টাকা’। শিগগিরই এই নাটকের নির্মাণ দিয়ে ফিরছেন তিনি।
হিমু আকরাম বলেন, ‘চারপাশে হাজার পেশার হাজার রকমের খেটে খাওয়া মানুষ দেখি। এসব মানুষের জীবন নিয়েই নাটকটি লিখেছি। এর মধ্যে রয়েছে-প্রেম, সম্পর্কের জটিলতা, হাসি-কান্না, ঝগড়া, খুনসুটি। মোট কথা নাটকটি দেখে দর্শক বিনোদিত হবেন।’
Advertisement
নাটকের গল্পে দেখা যাবে, অভিরামপুর গ্রামের বিচিত্র সব পেশার মানুষের চরিত্র।
কুব্বত আলী বানর দিয়ে অন্যের হাত গণনা করে। বানরের নাম মিস্টার দুলাল। গ্রামের বিভিন্ন শালিস দরবারে দুলালকে রাখা হয় অপরাধী ধরার জন্য। কুব্বাতের সব অশান্তি এই দুলালকে ঘিরেই।
কুব্বাতের সহকারীর নাম ব্যাটারি। সাইজে ছোট বলেই তার এ নাম। ভবিষ্যতে মিস্টার দুলালের মতোই একটি বানরের মালিক হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই কুব্বাতের সঙ্গে সঙ্গে থাকে সে।
অন্যদিকে গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে থাকে কুব্বাতের ছোট ভাই মোহাব্বত। এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরে ঘুরে লেইসফিতা, শাড়ি, চুড়ি বিক্রি করে। মহিলাদের সাথে তার অন্যরকম ভাব ভালোবাসা।এই সব নিয়ে বউয়ের সঙ্গে প্রতিনিয়তই ঝামেলা বাধে তার।
Advertisement
ঝামেলার মানুষ সর্পরাজ রেজ্জাকও। সাপ ধরা আর খেলা দেখানোই রেজ্জাকের কাজ।
সে বাকির উপর চলে। ‘সাপ এবং মানুষের প্রেম’ নামে বইয়ের রচয়িতা। পকেটে বিষধর গোখরো থাকে তার, কিন্তু কেউ কখনো দেখেনি সেই সাপ। তবুও ভয় পায় রেজ্জাককে।
ভয়ের মানুষ বক্কর চেয়ারম্যানও। পর পর তিনবার ফেল করেছেন। তবুও গ্রামের যে কোনো ঝামেলা হলেই নিজ দায়িত্বে বিচার বসায় বক্কর। তার বিচার কেউ মানেনি কোনোদিন। অতি মাত্রায় টাউটারি করে বলেই জনগণ তাকে নিয়ে অশান্তির মধ্যে থাকে।
অন্যদিকে ঘুরে ঘুরে অশান্তি বিলি করে বদর ওস্তাদ। বন্ধকী ব্যবসা তার। সোনা দানা, ঘড়ি,সাইকেল, রিক্সা,গরু, ছাগল থেকে শুরু করে মানুষ পর্যন্ত বন্ধক রাখে বদর ওস্তাদ। বিনিময়ে টাকা ধার দেয়।বদর ওস্তাদের হাত থেকে বাচার জন্য মানুষ খোজে শান্তি মলম!
একই গ্রামের নাম করা চোর হাক্কানি। সোনা দানা থেকে প্ল্যাস্টিকের বদনা সবকিছুই সে চুরি করে। চুরি বিদ্যা শেখানোর জন্য একটা স্কুল দেয়ার স্বপ্ন তার। হাক্কানির চুরিতে শান্তিতে নেই গ্রামবাসী।
শান্তি নাই গ্রামের মেয়েদের মনেও। কুব্বাতের প্রেমিকা গুলবাহার কিংবা মোহাব্বতের স্ত্রী কহিনুর, রেজ্জাকের স্ত্রী চায়না বিবি অথবা মোল্লাবাড়ীর বউ বিউটি - এরা সবাই অশান্তির মধ্যে থাকে রাত দিন।
কারো মেকাপ বক্সের দুঃখ, কারো দুঃখ সিনেমা হলে না যেতে পেরে। একুশ ইঞ্চি রঙিন টেলিভিশনের দুঃখ কারো। কারো বা দুঃখ স্বামী বিদেশ থাকে বলে। এইসব অশান্তিতে থাকা মানুষদের জন্য চাই শান্তি। সেই শান্তিরই গল্প শোনাবেন হিমু।
বর্তমানে নাটকটির কাস্টিং আর শুটিংয়ের পরিকল্পনা করছেন নির্মাতা। এখানে দেখা যাবে একঝাঁক তারকাদর উপস্থিতি। শিগগিরই বেসরকারি একটি টেলিভিশনের জন্য শুরু করবেন ‘শান্তি মলম ১০ টাকা’ নাটকের নির্মাণ।
এলএ/এমকেএইচ