আল্লাহ তাআলার কাছে একমাত্র ইসলামই গ্রহণযোগ্য জীবন ব্যবস্থা। ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো জীবনাদর্শ বা ধর্ম গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে এ কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন যে, ‘যারা ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো জীবন ব্যবস্থা সন্ধান করে, তা তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করা হবে না।’
Advertisement
ইসলাম পরবর্তী কোনো যুগেই ইসলাম ছাড়া কোনো আদর্শ মুসলমানের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। কোনো ক্ষমতার কাছেই মুসলমান মাথা নত করেনি। যেমনিভাবে প্রবল ক্ষমতাধর সম্রাট আকবরের যুগে তার প্রতিষ্ঠিত ‘দ্বীনে ইলাহী’ মাথা উঁচু করতে পারেনি।
ইসলামই একমাত্র গ্রহণযোগ্য ও পছন্দনীয় জীবন ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃত। সে ঘোষণাই দিয়েছেন মহান আল্লাহ তাআলা-
আয়াতের অনুবাদ
Advertisement
আয়াতের পরিচয় ও নাজিলের কারণএ সুরার ১৮নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা নিজেই তার একত্ববাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। অতঃপর ঘোষণা করেন যে, ইসলাম-ই হলো দুনিয়াতে চিরস্থায়ী প্রতিষ্ঠিত একমাত্র গ্রহণযোগ্য জীবন ব্যবস্থা। এর পরে আর কোনো জীবন ব্যবস্থা আসবে না।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর মিথ্যা নবুয়তের দাবি নিয়ে অসংখ্য লোক আত্মপ্রকাশ করেছিল। তাদের সে দাবি ঈমানের বলে বলিয়ান মুসলমানের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। দুনিয়ার বহু ক্ষমতাধর রাজা-বাদশারাও ইসলামের সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করে টিকতে পারেনি। যার জলন্ত প্রমাণ সম্রাট আকবর।
বর্তমান সময়েও বহু মানুষ ইসলামকে সঠিক ভাবে বুঝার চেষ্ট করে না। তাদের ধারণা ইসলাম নিতান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। বাস্তবে ইসলাম নাম সর্বস্ব এমন জীবন ব্যবস্থা নয়, বরং ইসলাম হলো আল্লাহ তাআলা কর্তৃক মনোনীত ও পছন্দনীয় পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। যাতে অপরিপূর্ণতার কোনো কিছুই নেই।
মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বয়ং সম্পূর্ন এক জীবন ব্যবস্থার নাম-ই হলো ‘ইসলাম’। আর কুরআনে পাকে সে ঘোষণাই দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা।
Advertisement
মনে রাখতে হবেযারা ব্যক্তি জীবনে ইসলামকে মেনে চলে কিন্তু সমাজ, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামের বাস্তবায়ন দেখতে চায় না, তারা ইসলামের কিছু অংশের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলো আর কিছু অংশের প্রতি অবিশ্বাস করলো। আল্লাহর কাছে এ রকম খণ্ডিত ইসলাম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন > আল্লাহ যেভাবে নিজেই একত্ববাদের সাক্ষ্য দিলেন
যারা আধুনিককালে যারা মুসলমান হয়েও সেকুলারিজম তথা ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে এবং তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষতার ছত্রছায়ায় ইসলামকে দুর্বল ও অপরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে সাব্যস্ত করার প্রয়াস চালায়, তাদের ভ্রান্ত ধারণা এ আয়াত দ্বারাই বাতিল ঘোষিত হচ্ছে।
আয়াতের শেষাংশে আল্লাহ তাআলা ইসলামকে অবিশ্বাসকারীদের প্রতি হুশিয়ারি দিয়ে ঘোষণা করেছেন, ‘যারা ইসলামকে পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে মানতে নারাজ তাদের জানা উচিত আল্লাহ তাআলা তাদের কর্মকাণ্ডের হিসাব গ্রহণে আল্লাহ তাআলা অনেক দ্রতগামী। সুতরাং সময় থাকতেই আল্লাহর দিকে ফিরে আসা বুদ্ধিমানের কাজ।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামকে মেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার প্রতিটি কাজে পরিপূর্ণভাবে ইসলামকে গ্রহণ ও এর বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম