দেশজুড়ে

মুহিত-জাহিরকে হত্যার পরিকল্পনা : ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরকে হত্যা পরিকল্পনার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।এ মামলায় পৌর মেয়র জিকে গউছসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, কারাগারে গউছের উপর হামলাকারী ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটন, যুবদল নেতা শফিকুর রহমান সেতু, ছাত্রদল নেতা জিকে ঝলক ও বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ বাহার। গত শুক্রবার রাতে সদর থানা পুলিশের সহকারী পরিদর্শক (এসআই) ছানা উল্লাহ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। তবে থানা পুলিশ মামলাটির ব্যাপারে অতি গোপনীয়তা রক্ষা করছে। এদিকে শনিবার মামলার কপি জেলা দুর্নীতি দমন অফিসে পাঠানো হয়েছে।সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন জাগো নিউজ জানান, এ মামলার আসামি জিকে গউছ, ইলিয়াছ মিয়া ও আব্দুর রউফ বাহার বর্তমানে কারাগারে আটক আছেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ ইতোমধ্যেই অভিযান শুরু করেছে। আশা করা যায় তাদেরকেও দ্রুততম সময়ের মধ্যেই গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা এবং বিস্ফোরক মামলায় হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে আটক জিকে গউছ একই কারাগারে আটক দু’টি হত্যা মামলার আসামি ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটনের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। অর্থমন্ত্রীকে হত্যা করতে ১০ কোটি এবং আবু জাহিরকে হত্যা করতে ২ কোটি টাকা দিতে ইলিয়াছের সঙ্গে মৌখিকভাবে চুক্তিবদ্ধ হন গউছ। অগ্রিম হিসেবে ইলিয়াছের কারাগারের একাউন্টে (পিসি) ১০ লাখ টাকা জমা দেয়ার কথা ছিল।পাশাপাশি তাকে কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত করারও কথা ছিল। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় জিকে গউছের কিছু অনুসারী কারাগারের অভ্যন্তর সেলে গিয়ে ইলিয়াছের সঙ্গে দেখা করে কাজ করার তাগিদ দেয়। ঈদুল ফিতরের আগের দিন গউছের অনুসারী হাজতি আব্দুর রউফ সেলে গিয়ে ইলিয়াসের সঙ্গে দেখা করে কেন কাজ করছে না এজন্য তাকে গালিগালাজ করে।ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে কুলাকুলি করার সময় গউছ তার কাজ না হওয়ায় ইলিয়াছকে গালিগালাজ করেন। তখন সে ধারণা করে গউছের অনুসারীরা তার উপর হামলা করতে পারে।এক পর্যায়ে ইলিয়াছ একটি বালতির স্টিলের হাতল দিয়ে জিকে গউছের পিঠে আঘাত করে।তখন গউছের সমর্থকরা তাকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেয়।এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করলে ইলিয়াছকে রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বর্ণনা দেয়।তার জবানবন্দির বরাত দিয়ে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন ধরে দু’টি হত্যা মামলায় ইলিয়াছ কারাগারে আটক রয়েছে।গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি জিকে গউছ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।এর কিছুদিন পরই একই মামলার আসামি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকেও কারাগারে পাঠানো হয়। তারা উভয়ই ডিভিশনপ্রাপ্ত হাজতি হিসেবে কারাগারে থাকেন।সেখান থেকে জিকে গউছ তার কয়েকজন লোক দিয়ে অপর হাজতি ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটনকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য খবর পাঠান।এরই মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরী হবিগঞ্জ কারাগার থেকে অন্য কারাগারে চলে যান।এর মাস খানেক পর কারান্তরীন জিকে গউছের লোকরা ছোটনকে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। পরে সাবেক জেল সুপার নূরশেদ আহম্মদ ভূঁইয়ার অনুমতি নিয়ে কারাগারের সুবেদার জহির ও সিআইডির (কারারক্ষী) আনোয়ারের সহায়তায় গউছের কক্ষে গিয়ে ইলিয়াছ দেখা করে।সেখানে বসেই এ হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা হয়।এখলাছ খোকন/এমএএস/এমআরআই

Advertisement