‘গত বছর যখন জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় আমাদের দুই ভাইবোন নিহত হলো তখন নিষ্ঠুরভাবে হেসেছিলেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। অথচ সেই লোকটাকে প্রধান করেই সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কি ধরনের রসিকতা!’
Advertisement
জাগো নিউজকে কথাগুলো বলছিলেন নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান শাকিল। তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটির ছাত্র।
সু-প্রভাত পরিবহনের বাসচাপায় গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহম্মেদ চৌধুরী নিহতের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো আজ বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ।
রাজধানীর উত্তরার হাউস বিল্ডিং মোড়ে রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করছেন উত্তরা ইউনিভার্সিটিসহ কয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
তুমুল স্লোগানের ফাঁকেই কথা হয় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তারা বলেন, গত বছরও আমাদের আন্দোলন থামিয়ে দেয়া হয়েছিল আশ্বাস দিয়ে। নতুন মেয়র আবারও আমাদের সেই আশ্বাসের ফাঁদে ফেলতে চাইছেন। আমরা আশ্বাসের নামে প্রহসনে আর পা ফেলছি না।
প্রসঙ্গত, গত বছর ২৯ জুলাই জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার ঘটনায় যখন সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে তখন তৎকালীন নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহাজান খান হাসতে হাসতে দোষীদের শাস্তির কথা জানান।
দায়িত্বশীল একজন মন্ত্রীর এমন আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পরে ক্ষমাও চান শাজাহান খান।
এবার মন্ত্রিত্ব না পেলেও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খানকে প্রধান করে ১৫ সদস্যের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
Advertisement
এদিকে ওই দুর্ঘটনার পর জাবালে নূর রাস্তায় চলবে না বলে আশ্বাস দেয়া হলেও নতুনভাবে রং লাগিয়ে চলছে সেই বাস।
এ প্রসঙ্গে সালেহ মাহমুদ নামে এক শিক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল মেয়র বললেন সুপ্রভাত চলবে না। অথচ সন্ধ্যায়ও আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রী নিয়ে তাদের গাজীপুরে যেতে দেখা গেছে।
এ শিক্ষার্থীর প্রশ্ন বাস চলবে না মানে কি রং করে নতুনভাবে রাস্তায় নামা? যদি তাই হয় তাহলে এমন আশ্বাস আমরা চাই না।
গাজী হানজালা নামে উত্তরা হাইস্কুলের একজন শিক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত বছর আমাদের দুই শিক্ষার্থী ভাইবোনকে চাপা দেয়া জাবালে নূর আবার চলছে। সেবারের আশ্বাসের পর আবারও আমাদের এক ভাই মারা গেলো, কেনো?’
‘বাবার সামনে তার সন্তান বাস চাপা পড়লো কেন?,’ প্রশ্ন হানজালার।
গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে প্রগতি সরণি এলাকায় সু-প্রভাত (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৪১৩৫) বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর শিক্ষার্থী আবরার আহম্মেদ চৌধুরী নিহত হন। এ ঘটনার পরই সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ৮ দফা দাবি ঘোষণা করেন এবং বুধবার (২০ মার্চ) সকাল ৮টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেন।
জেপি/এনডিএস/এমকেএইচ