জাতীয়

বাস না পেয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ

‘কেন যে ওর বাবার কথা শুনলাম না। সকালবেলা মেয়েকে নিয়ে স্কুলে রওনা হওয়ার পথে বলেছিল আজ যাওয়ার দরকার নেই। ছাত্ররা মিরপুর রোড অবরোধ করতে পারে। কিন্তু মেয়ের স্কুল মিস হবে ভেবে তার কথা শুনিনি। এখন বুঝতে পারছি বড্ড ভুল হয়ে গেছে। বাস তো চলছে না, এখন মেয়েকে নিয়ে কীভাবে বাসায় ফিরব।’

Advertisement

মিরপুরের বাসিন্দা আজিমপুরে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মৌ সাহার মা বেলা ১২টায় আজিমপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আরেক ছাত্রের অভিভাবককে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলছিলেন।

গতকাল বাসচাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ দ্বিতীয় দিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু কিছু এলাকায় সীমিতসংখ্যক বাস চলাচল করলেও সেগুলোতে ওঠার জন্য চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা। অধিকাংশ বাস রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। দু-একটি বাস সাহস করে রাস্তায় নামলেও যাত্রীদের চাহিদার তুলনায় খুবই কম। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আজিমপুর এলাকায় ‘ঠিকানা’ বাসের একজন হেলপার জানালেন, সকাল বেলা বাস চললেও বেলা ১২টার পর থেকে বাস চলাচল করছে না। ভাঙচুর হতে পারে- এ আশঙ্কায় মালিকরা বাস নিরাপদে রাখতে বলেছে।

Advertisement

ওই এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট জানালেন, শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে সড়ক অবরোধের খবর পাচ্ছি। তাই বাস ভাঙচুর হতে পারে- এ আশঙ্কায় আমরাও আপাতত বাস চলাচল করতে দিচ্ছি না।

বাস চলাচল না করায় রিকশাচালকদের পোয়াবারো। একাধিক যাত্রী জানান, বিভিন্ন গন্তব্যে রিকশাচালকরা ন্যায্য ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া চাইছেন।

গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে ডিএনসিসি আওতাধীন প্রগতি সরণি এলাকায় সু-প্রভাত (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৪১৩৫) বাসের চাপায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহম্মেদ চৌধুরী নিহত হন। পরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ৮ দফা দাবি ঘোষণা করেন এবং বুধবার (২০ মার্চ) সকাল ৮টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেন। আজ সকাল ৮টা থেকে তারা আবারও রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন। আজ শুধু গ্রগতি সরণি নয়, রাজধানীর শাহবাগ, পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন।

এমইউ/জেডএ/এমকেএইচ

Advertisement