প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির অর্থ উত্তোলনের অপব্যবহার ঠেকাতে এ-সংক্রান্ত নোটিফিকেশনে সংশোধনী আনার উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
Advertisement
এ লক্ষ্যে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলমকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার ৬৮০তম নিয়মিত কমিশন সভায় এ কমিটি গঠন করা হয়।
সম্প্রতি শেয়ারবাজারে মন্দা দেখা দেয়ার পেছনে এই প্রাইভেট প্লেসমেন্টকে দায়ী করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসইর পর্ষদ সভায়ও প্রাইভেট প্লেসমেন্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সেই সঙ্গে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের নীতিমালায় পরিবর্তন আনার জন্য ডিএসইর পক্ষ থেকে বিএসইসিতে একটি আবেদনও করা হয়।
প্রাইভেট প্লেসমেন্ট নিয়ে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই তা সংশোধনের উদ্যোগ নেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ বিষয়ে বিএসইর নির্বাহী পরিচারক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান জানিয়েছে, এ কমিটি অতালিকাভুক্ত কোম্পানির অর্থ সংগ্রহ-সংক্রান্ত ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর বিএসইসির জারি করা নোটিফিকেশন (এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০৯-১৯৩/১১৪/এডমিন.২৮) পর্যালোচনা করে সংশোধনীর জন্য সুপারিশ করবে।
Advertisement
সম্প্রতি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের সমালোচনা করে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়শন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভীর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, প্লেসমেন্টের জন্য প্রতিনিয়ত বাজার থেকে টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। একদিকে প্লেসমেন্টধারীরা কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ২-৩ গুণ লাভে শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিচ্ছে। অন্যদিকে তাদের এই লাভ দেখে অন্য অনেক বিনিয়োগকারী সেকেন্ডারি বাজার থেকে টাকা তুলে নিয়ে প্লেসমেন্ট শেয়ার কিনছেন।
ডিবিএ সভাপতি বলেন, চলমান প্লেসমেন্টে একটি চক্র কৌশলে প্রতিটি শেয়ারে ৫ থেকে ১০ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা ১০ টাকার শেয়ার ১৫-২০ টাকায় বিক্রি করছেন। কিন্তু তার কোনো রেকর্ড নেই। এই রেকর্ডহীন প্রিমিয়ামের অর্থ কোম্পানিতে ঢুকছে না। এ ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থ নিয়ে কেটে পড়ছে চক্রটি।
তিনি লেখেন, আইপিও পূর্ব প্রাইভেট প্লেসমেন্ট একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা বন্ধের পক্ষে আমরা নই। অনেক সময় ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য জরুরি প্রয়োজনে উদ্যোক্তারা প্লেসমেন্টে শেয়ার ইস্যু করে মূলধন সংগ্রহ করতেই পারেন। কারণ আইপিওতে মূলধন সংগ্রহের প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ। কিন্তু বর্তমানে যেভাবে প্লেসমেন্ট হচ্ছে, তা ব্যবসা সম্প্রসারণে নয় বরং অসাধু উদ্দেশ্যেই হচ্ছে।
‘তথাকথিত প্লেসমেন্টের কারণে অনেক সাধারণ মানুষ লোভেরবশে ঝুঁকিতে পড়ছেন। ১০০ কোম্পানির প্লেসমেন্ট হলে তাদের মধ্য থেকে মাত্র ১৫-২০টি আইপিওতে আসতে পারে। বাকিগুলো আটকে যাবে। কারণ, এসব কোম্পানির মান এত খারাপ যে, হিসাবে কারসাজি করেও এগুলোকে আইপিওতে আনার উপযোগী করা যাবে না। ফলে এসব প্লেসমেন্টে বিনিয়োগকারীরা সর্বস্ব হারাবেন’ উল্লেখ করেন শালিক রিজভী।
Advertisement
এমএএস/জেডএ/জেআইএম