শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় ক্ষুব্ধ ও অপমানিত হয়ে বৃষ্টিতে ভিজলেন জনপ্রিয় লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। শিক্ষকদের ওপর হামলার পরপরই ক্যাম্পাসে নেমে আসা বৃষ্টিতে তিনি বসে থেকে ভিজলেন, যেন অপমানের কান্না লুকাতে চান বৃষ্টির আড়ালে।উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে সস্ত্রীক সক্রিয় রয়েছেন তিনি। আন্দোলনরত অন্যান্য শিক্ষকরা যখন ছাতা নিয়ে এগিয়ে আসছিলেন তখন তিনি তা গ্রহণ না করে ভিজতে থাকেন।রোববার সকাল ৮টায় প্রশাসনিক ভবন-২ (উপাচার্য ভবন) এর সামনে ছাত্রলীগ কর্তৃক লাঞ্ছিত হন মুহম্মদ জাফর ইকবালের স্ত্রী ড. ইয়াসমীন হকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ব ঘোষিত একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ঠেকাতে রোববার সকাল ৮টা থেকে প্রশাসনিক ভবন-২ (উপাচার্য ভবন) এর সামনে অবস্থান কর্মসূচি ছিল আন্দোলনকারী মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের।অন্যদিকে, শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি ঠেকাতে সকাল ৭টা থেকেই এক স্থানে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। পরে সকাল সাড়ে ৭টায় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা উপস্থিত হলে ছাত্রলীগের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। ছাত্রলীগ কর্মীরা নিজেদের সাধারণ শিক্ষার্থী বলে দাবি করলেও ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আবু সাঈদ আকন্দ, সহ-সভাপতি অঞ্জন রায় ও যুগ্ম-সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজ ওই সময় উপস্থিত ছিলেন।এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শাবির মাটি/ছাত্রলীগের ঘাঁটি স্লোগান দিয়ে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়। ছিনিয়ে নেয় শিক্ষকদের ব্যানার। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কর্তৃক লাঞ্ছিত হন আন্দোলনকারী শিক্ষক ড. ইয়াসমিন হক, ড. দীপেন দেবনাথ, ড. সৈয়দ সামসুল আলম, মো. ফারুক উদ্দিন, মোস্তফা কামাল মাসুদ, মোহাম্মদ ওমর ফারুকসহ আরো কয়েকজন। হামলায় হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন অধ্যাপক ড. মো. ইউনুছ।বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটে। এ হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জালালাবাদ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।আন্দোলনকারী শিক্ষকদের নেতা ফারুক আহমদ বলেন, ছাত্রলীগ বর্বরোচিতভাবে হামলা চালিয়েছে। শিক্ষকদের ওপর এ হামলার ঘটনা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করেছে।প্রসঙ্গত, উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচারণ, নিয়োগে অনিয়ম ও আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে তার পদত্যাগ দাবিতে গত ১৩ এপ্রিল থেকে আন্দোলন করে আসছে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ আওয়ামী পন্থী শিক্ষকরা।ছামির মাহমুদ/এআরএ/পিআর
Advertisement