নানা জটিল সমীকরণের কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী করা হচ্ছে না। এই নিয়ে চলছে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম। কর্মবিরতি, শীর্ষ কর্মকর্তার অফিস ঘেরাও, অবরোধ- কোন কিছুই কাজে আসেনি। কখনো কখনো আন্দোলন তীব্র হলে তা দমাতে হাতিয়ার হিসেবে শ্রমিক-কর্মচারীদের নির্বাচিত ইউনিয়নের (সিবিএ) নেতাদের ব্যবহার করেছে কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনে নামিয়ে ওই সিবিএ নেতারাই আবার প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা করে আশার বাণী শুনিয়েছেন। যে কারণে উপরে উপরে সুসম্পর্ক রাখলেও ক্যাজুয়েল শ্রমিকরা এখন আর বিমান শ্রমিকরা সিবিএ নেতাদের ভরসা করতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে তারা আবারও মাঠে নামার ইঙ্গিত দিয়েছে। দাবি আদায়ে আন্দোলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে তারা।
জানা গেছে, গত বছরের শেষের দিকে পরিচালনা পর্ষদে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণের সিদ্ধান্ত হয়। তবে জাতীয় নির্বাচনের কারণে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কালক্ষেপণ হয়। কথা ছিল নির্বাচন পরবর্তী প্রথম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। পরবর্তীতে বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত তিন মাস এই নিয়ে কেউ মুখ খোলেনি। গত মাসে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের পর দুটি বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হলেও, ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়নি।
বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন বিমানের ভুক্তভোগী ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা- জানতে চাইলে বিমান ক্যাজুয়াল শ্রমিক নেতা হানিফ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সর্বোচ্চ ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেখব। সিবিএ আমাদের দাবি আদায়ে চেষ্টা করেছে। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের স্থায়ী করা না হয়, তাহলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আমরা আর কারো মিষ্টি কথা শুনবো না। ন্যায্য দাবি কিভাবে আদায় করতে হয়, তা আমাদের জানা আছে।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বোর্ড সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা অবশ্যই কার্যকর হবে। তবে যথাযথ নিয়মের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর বিমানের পর্ষদ সভায় তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের সিদ্ধান্ত নেয়ার খবর পাওয়া যায়। স্থায়ীকরণের পর শ্রমিকদের কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে, সেজন্য তিন সদস্যের একটি সাব কমিটিও গঠন করা হয়। কিন্তু এরপর তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিমান প্রশাসন।
বিমানের কার্গো সার্ভিস, ট্রাফিক বিভাগ, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, গ্রাউন্ড সার্ভিস, মোটর ট্রান্সপোর্ট বিভাগে ক্যাজুয়াল শ্রমিক বেশি। বিমানে প্রায় দুই হাজার ২০০ ক্যাজুয়াল শ্রমিক আছে। এর মধ্যে ৭০০ জন ১০ দিনের মেয়াদে চুক্তিতে নিয়োগ পান। বাকিরা ৮৯ দিনের চুক্তিতে কাজ করছেন যুগের পর যুগ।
আরএম/এমএসএইচ/পিআর
Advertisement