আন্তর্জাতিক

ক্রাইস্টচার্চে স্ত্রী নিহত তবুও খুনিকে ক্ষমা করলেন পঙ্গু স্বামী

গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। আল নুর মসজিদে নিহতদের মধ্যে একজন হলেন বাংলাদেশি নারী হোসনে আরা। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে অন্যদের এবং স্বামীর জীবন বাঁচাতে গিয়ে সেদিন নিহত হন হোসনে আরা।

Advertisement

হামলার সময় অনেকেই মসজিদ থেকে পালিয়ে যেতে পারলেও বেরোতে পারেননি হোসনে আরা। তার আগেই তাকে নৃশংসভাবে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের দু'টি মসজিদে ওই হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয় এবং আরও অনেকেই আহত হয়েছেন।

এই ঘটনায় ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্ট হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। তারপরেও হত্যাকারী ব্রেন্টন ট্যারান্টকে ক্ষমা করে দিতে চান হোসনে আরার স্বামী ফরিদ উদ্দীন। ওই হামলার ঘটনার পর তিনি জানান, আমি বলতে চাই ক্ষমাই পরম ধর্ম। ক্ষমা করেই এগিয়ে যেতে পারে মানুষ।

তিনি আরও বলেন, আমি ওকে বলব, তোমার মধ্যেও একজন অসাধারণ মানুষ হওয়ার ক্ষমতা আছে ব্রেন্টন। এমন একজন মানুষ যে, মানুষকে মারার বদলে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে, মনুষ্যত্বে বিশ্বাস করা ক্ষমাশীল, দয়ামায়ায় পূর্ণ একজন মানুষ। বন্দুকধারী ব্রেন্টন যেন জীবনের প্রকৃত পথ খুঁজে পায় তার জন্য প্রার্থনা করবেন বলেও জানিয়েছেন ফরিদ উদ্দীন।

Advertisement

১৯৯৮ সালে ফরিদকে পিষে দিয়েছিল এক মদ্যপ ড্রাইভার। সেই থেকে হুইলচেয়ারেই আবদ্ধ ছিল ৫৯ বছরের ফরিদের জীবন। স্ত্রী হোসনে আরাই ছিলেন তার একমাত্র ভরসা।

শুক্রবারের সেই ভয়ংকর হামলার কথা এখনও স্পষ্ট মনে করতে পারেন ফরিদ। বন্দুকধারীর হামলা শুরু হতেই নারী ও শিশুদের হল থেকে বেশ কয়েকজনকে পালাতে সাহায্য করেন তার স্ত্রী। তাদের নিয়ে বেরিয়েও যান সামনের বাগানে। তারপরেই আবার ফরিদকে খুঁজতে ফিরে আসেন মসজিদের দরজার কাছে। তখনই তাকে গুলি করে হত্যা করেন ব্রেন্টন।

মসজিদের ভেতর এক একজনকে দু’তিনবার করে গুলি করেছে উন্মাদ ব্রেন্টন। এমনকী বারবার গুলি চালাচ্ছিল নিহতদের দেহেও। তার মধ্যেই কোনওক্রমে বেরিয়ে আসতে পারেন ফরিদ। তারপর আর খুঁজে পাননি স্ত্রীকে। পরে সামাজিক মাধ্যমে নিহতদের একটি ছবির মধ্যেই দেখতে পান স্ত্রী হোসনে আরাকে। বুঝতে পারেন তার স্ত্রী আর নেই।

টিটিএন/পিআর

Advertisement