জাতীয়

নানা আনুষ্ঠানিকতায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপিত

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন উদযাপিত হয়েছে। একই সঙ্গে দিনটিকে দেশব্যাপী ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়।

Advertisement

কর্মসূচির মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, কেক কাটা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, মোনাজাত, প্রার্থনা, শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে চিকিৎসা, পুরস্কার বিতরণ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে রোববার ভোরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জাতির পিতার প্রতিকৃতির বেদীতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের পর স্বাধীনতার এই মহান স্থপতির প্রতি সম্মান জানাতে প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন।

Advertisement

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেইন হুমায়ুন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুল মতিন খসরু, ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বি এম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য এবং গবেষণা সম্পাদক অ্যাডকোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সুজীত রায় নন্দীসহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ভবন এলাকা ত্যাগ করার পর আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।

পরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড-অব-অনার প্রদান করে। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে অনুষ্ঠিত মোনাজাতে শরিক হন।

দিনটি ছিল সরকারি ছুটির দিন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়।

Advertisement

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সারাদেশের সকল সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশেষ সেবাদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন এবং সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

রোববার প্রথম প্রহরে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জাতীয় প্রেসক্লাবে রক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি শিশু চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তন, মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন, বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি উদযাপন করেছে। এছাড়া সারাদেশের সরকারি অফিস, স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

এফএইচএস/বিএ/জেআইএম