অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গীতিকার আলতাফ আলী হাসু। তবে তার যে গানটি সবার মুখে মুখে সেটি হল ‘ও সখিনা গেছস কিনা ভুইলা আমারে।’ এই গীতিকবির নামাঙ্কিত আলতাফ আলী হাসু স্মৃতিপদক পেয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক পেয়েছেন তিনি। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে পদক প্রদান উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী। মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও আইনজীবী আলতাফ আলী হাসু ছিলেন ঋষিজের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। সংগঠনটি প্রতি বছর তার স্মরণে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘আলতাফ আলী হাসু স্মৃতি পদক’ প্রদান করে আসছে।
Advertisement
ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ফকির আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. আবুল আজাদ ও আলতাফ আলী হাসুর স্ত্রী মিনার বেগম।
পদকপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশে সাইফুল আলম বলেন, আলতাফ আলী হাসু ছিলেন খুবই সহজ-সরল একজন মানুষ। রাজনীতি সচেতন। মানুষই ছিল তার কাছে সব শক্তির উৎস-ধ্যান-ধারণা। আমরা একসঙ্গে দু’বছর কাজ করেছি। শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনেও আমাদের বিচরণ ছিল একসঙ্গে। তার নামাঙ্কিত এ পদক পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত এবং গর্বিত।
আলতাফ আলী হাসুর স্মৃতিচারণ করে ম. হামিদ বলেন, তিনি গান লিখেছিলেন খেটে খাওয়া মানুষ নিয়ে। গানের ভাষায় বলেছেন তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা। তার লেখা গণসঙ্গীত নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। জীবনমুখী গানের বিবেচনায় তার অনবদ্য সব গান যুগের পর যুগ ধরে টিকে থাকবে।
Advertisement
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, রাজনৈতিকভাবেও তিনি জীবনভর ছিলেন আদর্শিক মানুষ। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধে রেখেছেন অসামান্য ভূমিকা। সমাজতান্ত্রিক চেতনাকে ধারণ করে আজীবন মানুষের মুক্তির পক্ষে কথা বলেছেন।
ফকির আলমগীর বলেন, আলতাফ আলী হাসু গানের কথা ও সুরে মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেছিলেন। তার গানে ছিল দেশ মাটি মানুষের কথা। অনাহারী দুঃখী মানুষের কথা তার গানে পাওয়া যায়। একইসঙ্গে তার গানে আমরা পাই আন্তর্জাতিকতাবাদ। এসব কারণেই তিনি স্বতন্ত্র উচ্চতা লাভ করেন। তাকে স্মরণ করতে হয়।
আলোচনা সভার পর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন। দলগুলো হল- উদীচী, ক্রান্তি, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, আনন্দন, স্ব-ভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, সমস্বর, আলতাফ মাহমুদ সঙ্গীত বিদ্যানিকেতন এবং ঋষিজ। সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফকির আলমগীরও।
জেএইচ/পিআর
Advertisement