জাতীয়

সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের এ দেশে ঠাঁই নেই : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘এ দেশের হিন্দু, এ দেশের বৌদ্ধ, এ দেশের মুসলমান, এ দেশের খ্রিষ্টান এখানে আমরা সবাই মিলে বাঙালি। এখানে সন্ত্রাসীর জায়গা নেই, জঙ্গির জায়গা নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন, একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশের। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে যোগ্য নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।’

Advertisement

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্মেলন উপলক্ষে শুক্রবার ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশের। আর আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সে জন্যই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। আমাদের ব্রতই অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া। তবে স্বাধীনতার কয়েক বছর পরেই অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার ক্ষেত্রে আমরা একটা ঝাঁকুনিও খেয়েছিলাম। ২১ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যার ডাকে আশ্বস্ত হয়েছিল মানুষ। সারাদেশের মানুষ বুঝতে পেরেছিল বঙ্গবন্ধুর যোগ্য নেতা শেখ হাসিনা। তার ডাকে সবাই আমরা একতাবদ্ধ হয়েছি। তিনি একে একে চারবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, ক্ষুদা দারিদ্র্যসহ সব সমস্যা মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে একটা অবস্থানে নিয়ে গেছেন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা ২০১৩/১৪ সালে আগুন সন্ত্রাস দেখেছি। এরপর অসাম্প্রদায়িক দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান যাজকসহ ধর্মীয় গুরুদের হত্যার দৃশ্য দেখেছি। প্রধানমন্ত্রী ডাকলেন, নির্দেশনা দিলেন, সব ধর্মীয় নেতাকে ডেকে এক করার জন্য। এক জায়গায় বসে আমরা ঐক্যবদ্ধ প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। প্রত্যেক জেলা সফর করেছিলাম। আমরা সবার সহযোগিতায় সাম্প্রদায়িক হানাহানি বন্ধ করতে পেরেছি।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘২/১টা ঘটনা যে ঘটছে না তা নয়; তবে তা বিচ্ছিন্ন। এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এগিয়ে আসছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের পূজা উদযাপনে একজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পেতেন। আপনাদের দাবি আরও একজনকে সংযুক্ত করা। সে নির্দেশনা আমি দেব। কারণ আমরা চাই শান্তি, আমরা থমকে যেতে চাই না, এগিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাই। যেন পথ না হারায় বাংলাদেশ।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনাদের মন্দির সংস্কারের জন্য প্রধানমন্ত্রী ২৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। আপনাদের কোনো দাবি অপূর্ণ থাকবে না। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদেরও দিয়েছেন। কারণ তিনি এ দেশ ও মানুষকে ভালোবাসেন। আর আপনাদের দাবি করে দাবি আদায় করতে হবে না। এমনিই আপনারা পাবেন। কারণ আমরা একসাথে চলতে চাই। এটাই আমাদের ঐতিহ্য। আমরা এটাই স্বপ্ন দেখে আসছি। কারণ ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অহংকার। তিনি যা কমিটমেন্ট করেন তা করে দেখান। তিনি বলে গিয়েছিলেন, দাবি দাওয়া সব পেয়ে যাবেন। পেয়ে গেছেন, বাকিটুকুও পাবেন। আপনাদেরই জায়গা আপনারাই পেয়েছেন। সুন্দরভাবে সারাদেশে এ ঢাকেশ্বরী প্রাণকেন্দ্র থেকে পূজা উৎসব পরিচালনা করতে পারবেন। আমি দেশের অনেক স্থান ঘুরে বেড়িয়েছি, কোথাও এ প্রশ্ন হয় না যে, কে হিন্দু কে মুসলমান। তিনি কে, কি করেন প্রশ্ন হয়। আমরা যে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার পথে অনেক দূর এগিয়েছি এটাই তার প্রমাণ, আর আমরা এটাই চাই।’

Advertisement

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসী-জঙ্গির টুটি চেপে ধরেছি। পুরো বিশ্ব তা দেখেছে, নিউজিল্যান্ডে যা ঘটেছে সেজন্য আমরা নিন্দা জানাই। কি উদ্দেশ্যে কারা এঘটনা ঘটিয়েছে নিশ্চয় তা নিউজিল্যান্ড সরকার জানাবে। আমাদের টাইগাররা নিরাপদে রয়েছে।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, স্থানীয় সরকার ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, শৈলন্দ্র নাথ মজুমদার। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি।

জেইউ/এনডিএস/পিআর