ক্যাম্পাস

ঢাবির এফ রহমান হল সংসদের ষষ্ঠ ভিপি রংপুরের আলিম

দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে স্যার এ এফ রহমান হল সংসদের ষষ্ঠ ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন রংপুরের সন্তান আব্দুল আলিম খান।

Advertisement

ছাত্রলীগ মনোনীত সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, আলিম খান তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ৬৭৫ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৮৩৩ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রার্থী বিনি ইয়ামিন মোল্লা পেয়েছে মাত্র ১৫৮ ভোট।

১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হলে এ পর্যন্ত ছয়টি নির্বাচন হয়েছে। এবারের নির্বাচনে বিপুল ভোটে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল আলিম খান। সে হিসেবে স্যার এ এফ রহমান হল সংসদের ষষ্ঠ ভিপি তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আব্দুল আলিম খানের আগে এ হল সংসদের ভিপি ছিলেন পাঁচজন। ১৯৭৮-৭৯ শিক্ষাবর্ষে প্রথম ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন শাইফ উদ্দিন আহমেদ। পরের সেশনে ভিপি ছিলেন সহিদুল হক (১৯৭৯-৮০)। হল সংসদের তৃতীয় ভিপি ছিলেন এ টি এম মোস্তাফিজুর রহমান (১৯৮০-৮১), চতুর্থ ভিপি ছিলেন আবুল কালাম আজাদ খান (১৯৮৮-৮৯। আর ২৮ বছর আগে অনুষ্ঠিত শেষ নির্বাচনে (১৯৮৯-৯০) ভিপি হয়েছিলেন মো. আবু সাঈদ (রন্টু)।

Advertisement

ক্যাম্পাসে সবার কাছে ‘ক্লিন ইমেজের’ আব্দুল আলীম খান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করা মেধাবী এ ছাত্রনেতার জন্ম রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার মেডিকেল পাড়ায়। তার পিতা রফিকুল ইসলাম খান পেশায় ব্যবসায়ী। মা নিলুফা বেগম গৃহিণী। দুই ভাই-বোনের মধ্যে ছোট আলিম। ২০১০ সালে রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। পরে নটের ডেম কলেজ থেকে ২০১২ সালে এইচএসসি পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সাক্ষর রাখেন তিনি। পরে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগে। ওই বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ইন্স্যুরেন্স বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত।

হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অসাধারণ বাকপটুতা, নম্র আচরণ, উপস্থিত বুদ্ধি ও ছাত্র অধিকার নিয়ে সরবতা তার জনপ্রিয়তার মূল কারণ। ঢাবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে তার রয়েছে অন্যরকম গ্রহণযোগ্যতা। তিনি সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলেন ও সাধারণ ছাত্রের মতো জীবন যাপন করেন। তার এই স্বাভাবিক জীবন-যাপন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আদর্শের মূর্ত প্রতীক। এই আদর্শের কারণেই তিনি বিপুলসংখ্যক ভোট পেয়েছেন, বলছেন অনেকেই।

আব্দুল আলিম খান হলে ওঠার পরে থেকেই ছাত্রদের কল্যাণে সবসময় কাজ করে যাচ্ছেন। এর আগে ঢাবি ছাত্রলীগের উপ-দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মূলত তার জনপ্রিয়তা দেখে এবারের নির্বাচনে তাকে স্যার এ এফ রহমান হলে ভিপি পদে মনোনয়ন দেয় সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি।

এফ রহমান হলের ছাত্র হামিম বলেন, ‘একজন ছাত্রনেতা যে এত চমৎকারভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশতে পারেন, তাকে না দেখলে তা বিশ্বাসই হতো না। শিক্ষার্থীদের প্রতি তার দায়িত্বশীলতায় আমরা মুগ্ধ। এই কারণেই তিনি সর্বাধিক ভোট পেয়ে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন।’

Advertisement

মাসুদ আলম অপর এক ছাত্র বলেন, আব্দুল আলিম খানের কিছু উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো। আর সবার মতো তিনি কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষান্ত থাকেন না। বাস্তবায়নও করেন। এ কারণেই তিনি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেছেন।

ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় আব্দুল আলিম বলেন, ‘আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে চাই।’

শুধু শিক্ষার্থীদের অধিকার নয়, আগামীতে দেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করতে চান এই ছাত্রনেতা।

এমবিআর/পিআর