কোমল পানীয়র বোতলে বাংলা ভাষার অশ্লীল বা বিকৃত শব্দ ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন প্রচার করায় কোকা-কোলা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
একই সঙ্গে, এসব অশ্লীল ও বিকৃত শব্দের ব্যবহার কেন অবৈধ ও বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তথ্য সচিব, শিল্প সচিব, সংস্কৃতি সচিব, আইন সচিব, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজেসের (প্রা. লি.) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
Advertisement
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান রানা। অপরদিকে কোকা-কোলার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান, আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
রিটকারী আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান রানা জাগো নিউজকে আরও বলেন, কোমল পানীয় কোকা-কোলার বোতলের বিজ্ঞাপনে ‘জটিল, চরম, মাথা নষ্ট, বাবু, ঢিলা, ফাঁপর, জান, গুটি, গাব, আগুন, কড়া, অস্থির, পার্ট, প্যারা, ব্যাপক, যা-তা’ এর মতো বাংলা শব্দের ব্যবহার বন্ধে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে অনুমতি নিয়ে গত বুধবার (২৭মার্চ) আইনজীবী চন্দন চন্দ্র সরকারের পক্ষে এই রিট আবেদন করেছিলাম। আজ ওই রিটের শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেন।
তিনি বলেন, রিট আবেদনে কোমল পানীয় কোকা-কোলার বোতলে এসব শব্দের ব্যবহার কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না- তা জানতে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছিল।
মনিরুজ্জামান রানা বলেন, এ শব্দগুলো বোতলে বিজ্ঞাপন দিয়ে তারা প্রচার করছে, এটা আপত্তিজনক। আমরা চাই এ ধরনের শব্দের ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে। কারণ একটা শিশু দোকানে গিয়ে বলছে ‘আমাকে একটা প্যারা দেন।’ ‘একটা মাথা নষ্ট দেন’। এটার তো নেগেটিভ ইম্প্যাক্ট হচ্ছে। তাই এটার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এ কারণেই রিট আবেদন করা হয়েছে।
Advertisement
এদিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার এ রিটের বিষয়ে জানান, টেলিভিশন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় কোকা-কোলা বেভারেজ কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেয়ার সময় বাংলা ভাষায় একই শব্দের কয়েকটি অর্থযুক্ত বিভিন্ন বাক্য ব্যবহার করা হয়। যা বাংলা ভাষার বিকৃতি ও শ্রীহীন মনে হয়। এমনকি কুরুচিরও প্রকাশ পায়।
এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কোকা-কোলার বোতলে বাংলা ভাষার বিকৃতি বন্ধ, বাজারে থাকা কোকের বোতল প্রত্যাহার এবং এ নিয়ে প্রচারিত বিজ্ঞাপন বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সেই সঙ্গে বাংলা ভাষার বিকৃতি বন্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে রুল জারিরও আর্জি জানানো হয়।
একই সঙ্গে রিটে কোকের বোতলে বিকৃত বাংলা ভাষার প্রচার বন্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আজ আদালত রুল জারির আদেশ দিলেন।
এফএইচ/এমএমজেড/জেআইএম