ধর্মীয় উসকানি ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম জিয়াউর রহমানের আদালতে এ জামিনের আবেদন করেন খালেদার মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
জামিন আবেদনে তিনি বলেন, শুনানিতে এ মামলায় আমরা খালেদার ওকালতি নামা নিয়ে এসেছি। এ মামলায় আমরা তার জামিন প্রার্থনা করেছি। ন্যায়বিচারের স্বার্থে তার জামিন মঞ্জুর করা হোক। বাদী পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ জামিনের বিরোধিতা করেন। এ সময় মামলার বাদী এবি সিদ্দিকী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে ২০ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতার-সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদনের জন্য ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। এই দিন প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় ১৪ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত।
Advertisement
ধর্মীয় উসকানির মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের শুভ বিজয়ার অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের একপর্যায়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ পরে আছে। আসলে দলটি ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব ধরনের মানুষের ওপর আঘাত করে। আর লোক দেখানো ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দখল করে নেয়। ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ পরা এ জবর-দখলকারী সরকারের হাতে কোনো ধর্মের মানুষই নিরাপদ নয়।’
ওই বক্তব্যের জের ধরে দণ্ডবিধির ১৫৩ (ক) ও ২৯৫ (ক) ধারায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর হাকিম মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর নালিশি মামলাটি করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর আদালত মামলাটি শাহবাগ থানার একজন পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
২০১৮ সালের ৩০ জুন দুই মামলায় অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস।
Advertisement
উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুদকের দায়ের করা দুই মামলায় ১০ ও ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। আপিলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড বেড়ে ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতে ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়। সেখান থেকেই গত ৬ অক্টোবর চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেয়া হয়। টানা এক মাস ২ দিন বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসা নেয়ার পর ফের তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
জেএ/জেএইচ/জেআইএম