বিভিন্ন গবেষণা সূত্রে দেখা যাচ্ছে, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে কিডনি রোগের প্রকোপ বেশি এবং আগামী ১৫-২০ বছরে এ হার বাড়তেই থাকবে। গবেষণা আরও বলছে, ২০৪০ সাল নাগাদ কিডনি রোগ হবে পৃথিবীতে মৃত্যুর পঞ্চম কারণ। তাই কিডনি রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বিভিন্ন দেশের সরকার ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। আর এসব বিষয়ে কথা বলেছেন কিডনি বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব নেফ্রোলজির (আইএসএন) প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট অধ্যাপক ডা. বিবেকানন্দ ঝা।
Advertisement
এরজন্য প্রথমত, যেসব কারণে এ রোগ হয় সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। যেমন- হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন। যারা রোদে কাজ করেন, যেমন- কৃষক, দিনমজুর তারা সহজেই পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তাদের পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। উৎস সম্পর্কে না জেনে কোন হারবাল বা ভেষজ গ্রহণ না করা, ধূমপান, সাদা জর্দা বর্জন করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা- এগুলো সাধারণ নিয়মাবলী। কেউ যদি মনে করেন, তার শরীরে কোন অসুবিধা হচ্ছে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে বা নিকটস্থ হাসপাতালে যাবেন এবং চেকআপ করাবেন।
> আরও পড়ুন- হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় ফুলকপি
তবে বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিসকেই কিডনি রোগের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ডায়াবেটিস রোগী, কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে তা বেশ জটিল হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীর একবার কিডনি রোগ হয়ে গেলে, এটি পুরোপুরি নিরাময় করা যায় না। তবে রোগ যেন ধীরগতিতে অগ্রসর হয়, সে চেষ্টা করা যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য। যখন একজন মানুষের ডায়াবেটিস ধরা পড়ল, তখন থেকেই তাকে বুঝতে হবে যে, ডায়াবেটিসের একটি গুরুতর জটিলতা হচ্ছে কিডনি রোগ। এরজন্য নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে এবং নিয়ম-কানুন মানতে হবে। একজন ডায়াবেটিস রোগীর যখন কিডনি রোগ ধরা পড়ে তখন অন্যান্য জটিলতাগুলোও শুরু হয়, যেমন- একজন মানুষ ডায়াবেটিসের জটিলতায় অন্ধত্ববরণও করতে পারেন।
Advertisement
কিন্তু আশার কথা হলো, ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যায়। শুরু থেকে ডায়াবেটিস রোগীরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে কখনোই তাদের ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগ হবে না। পৃথিবীর অনেক দেশে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা হয়েছে। দেখা গেছে, ডায়াবেটিস ধরা পড়ার সাথে সাথে যারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, তারা ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগের প্রকোপ শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ থেকে ৫ ভাগে নামিয়ে নিয়ে এসেছেন।
> আরও পড়ুন- বিকল্প দুধে শিশুর যে ক্ষতি হয়
তাই ডায়াবেটিস রোগীরা তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সেটিকেও নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। প্রয়োজনে এসিই ইনহিবিটর গোত্রের ওষুধ খাবেন। নিয়মিত তাদের চিকিৎসকের মাধ্যমে কিডনি পরীক্ষা করাবেন।
এসইউ/আরআইপি
Advertisement