মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কর্তৃপক্ষের কাছে ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ মডেলের বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন পাইলটরা। তাদের মধ্যে একজন ক্যাপ্টেন তো সম্প্রতি ইথওপিয়ায় বোয়িংয়ের ওই মডেলের একটি বিমান বিধ্সস্ত হয়ে ১৫৭ জনের মৃত্যুর কয়েকদিন আগেই তাদের বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
Advertisement
মার্কিন দৈনিক ডালাস মর্নিং নিউজের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে অভিযোগকারী এসব পাইলটের বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, একজন পাইলট নাকি কয়েক মাস আগেই বোয়িংয়ের ফ্ল্যাইট ম্যানুয়ালকে ‘অনুপযুক্ত ও বিধি অনুযায়ী নিরাপত্তা অপ্রতুল বলে’ অভিহিত করেন।
ডালাস মর্নিং নিউজের প্রতিবেদনে তাদের হাতে আসা নথির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, এর আগেও বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে পাঁচিটি অভিযোগ দাখিল হয়েছিল। যেসব অভিযোগ পাইলটরা স্বপ্রণোদিত হয়েই করেছিল। অভিযোগে তারা বিমানটির উড্ডয়নের ক্ষেত্রে বিমানটির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
গত বছরের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ায় বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ আরোহী নিহত হওয়ার পরই মূলত তাদের বিমানরে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে এসব অভিযোগ দাখিল করা হয় পাইলটদের পক্ষ থেকে। পাইলটরা বোয়িংয়ের ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ নিয়ে তাদের আশঙ্কার কথা জানান সেসব অভিযোগে।
Advertisement
পাইলটদের অভিযোগ তোলো সেসব প্রতিবেদনে অটোপাইলট সিস্টেম নিয়ে সমস্যার কথা জানানো হয়। আর তাদের সবাই একটা অভেযোগ করেন বিমান অবতরণের সময়ই মূলত সমস্যায় পড়েন। অনেকে বলেন, হঠাৎ করে বিমান নিচের দিকে যাওয়ার প্রবণতা আছে বোয়িংয়ের বিমানে। আর এসব সমস্যা হয়েছে গেল বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরের মধে।
রেকর্ডে দেখা যায় যেসব পাইলট গত বছরের নভেম্বরে ম্যাক্স ৮ বিমানের ফ্ল্যাইট পরিচালনা করেছেন তাদের মধ্যে অনেকেকে সংশ্লিষ্ট বিমানটি সম্পর্কে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। তাছাড়া বোয়িংয়ের ৭৩৭ মডেলের বিমানের পদ্ধতিগুলো কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কেও যথাযথ ধারণা দেওয়া হয়নি তাদের।
বিগত পাঁচ মাসের মধ্যে বোয়িংয়ের একই মডেলের নতুন দুটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩৪৬ জন আরোহী নিহত হওয়ার পর বিশ্বের অধিকাংশ এয়ারলাইন্স ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এই মডেলের বিমান ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত গত পাঁচ মাসের মধ্যে এই মডেলের দ্বিতীয় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার। ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাব থেকে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি যাওয়ার পথে বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ মডেলের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ক্রুসহ ১৫৭ আরোহী নিহত হয়েছে। পাঁচ মাস আগে গত বছরের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারের একই মডেলের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ জন যাত্রী নিহত হন।
Advertisement
এসএ/এমএস