দেশজুড়ে

হিজলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে আলোচনা সভা

বরিশালের হিজলা উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যের বরাত দিয়ে সংগঠনের স্থানীয় নেতারা ওই সভায় বাধ্যতামূলকভাবে অংশগ্রহণের নির্দেশ দেয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শোক দিবসের সভায় যেতে বাধ্য করার কথা স্বীকার করেছেন সংশ্লিস্ট শিক্ষকরা।তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সভায় উপস্থিত থাকতে বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হিজলা অডিটরিয়ামে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের উদ্যোগে শোক দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক পংকজ নাথ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের উপজেলা সভাপতি ও হিজলা ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ খগেন চন্দ্রের সভাপতিত্বে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ সভায় বক্তৃতা করেন। হিজলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সভায় অংশ নেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জানান, দুইদিন আগে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ইকবাল চৌধুরী মোটরসাইকেলযোগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এমপির বরাত দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য শিক্ষকদের নির্দেশ দেন। এমপির নামে দেয়া ওই নির্দেশ অনুযায়ী হিজলার বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শোক দিবসের সভায় যোগ দেন।হিজলা সংহতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেমায়েতউদ্দিন জানান, আয়োজকদের পক্ষ থেকে স্কুল বন্ধ রাখতে বলা হয়। অনুষ্ঠানে এমপি আসবেন তাই শিক্ষকদের থাকতেই হবে। যে কারণে প্রধান শিক্ষকের সংরক্ষিত কোটায় শনিবার স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, আইনগতভাবে এটি ঠিক হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে স্কুল বন্ধ রেখে সভায় যেতে বাধ্য হয়েছেন।হিজলা বিএল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুবকর সিদ্দিক লাবলু জানান, ওই সংগঠনের নেতারা কয়েকদিন ধরে স্কুল-কলেজে গিয়ে এমপির অনুষ্ঠানে থাকার জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলেন। যে কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানই অতি উৎসাহে বন্ধ রেখেছে। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা না পাওয়ায় তিনি প্রতিষ্ঠান বন্ধ না রেখে আলোচনা সভায় একজন প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন মাত্র।নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে হিজলার বিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সংহতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বিএল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও হিজলা ডিগ্রি কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে এমপির উপস্থিতিতে শোক দিবসের আলোচনা সভায় অংশগ্রহণের কথা স্বীকার করেছেন।তবে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের হিজলা উপজেলা সভাপতি খগেন চন্দ্র এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়ার কর্তৃপক্ষ নয়। তবে কেউ যদি স্বেচ্ছায় সভায় যোগ দেয় সে ক্ষেত্রে তো কিছু করার নেই।হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা তানিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।এ বিষয়ে জানতে এমপি পংকজ নাথের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।সাইফ আমীন/বিএ

Advertisement