সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও চাঁদাবাজিতে সিদ্ধহস্ত কামাল হোসেন ওরফে টিকটিকি কামাল (৩৬)। ২০০৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর বিদেশি পিস্তল ও রিভলবারসহ সায়েদাবাদ এলাকায় র্যাবের হাতে আটকও হন। সাড়ে চার বছর জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে ফের শুরু করেন চাঁদাবাজি।
Advertisement
২০০৯ সালের ১৭ জুন প্রতিপক্ষ কবির হোসেনকে এলাকার শ্যামবাবুর ট্রাকের গ্যারেজে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এরপর থেকেই ছিল পলাতক।
কদমতলী থানা ও ডিবি পুলিশ অধিকতর তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিলেও টিকটিকি কামাল ছিল অধরা। আদালতের নির্দেশে সর্বশেষ মামলার তদন্ত করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো-উত্তর। প্রায় ১০ বছর পর অবশেষে মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) বিকেলে জুরাইন থেকে টিকটিকি কামালকে গ্রেফতার করে পিবিআই।
পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, কবির হোসেনের (২৫) সঙ্গে দীর্ঘদিন তার পরিবারের সদস্যদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। তিনি কদমতলী থানার ২১নং রজ্জব আলী সরদার রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার মহিষাটেকির ধানীখোলার আব্দুল জলিলের ছেলে।
Advertisement
২০০৯ সালের ১৭ জুন পরিবার খবর পায় কবির হোসেনকে মুরাদপুর মাদরাসা রোডস্থ শ্যামবাবুর ট্রাকের গ্যারেজের সামনে কে বা কারা গুলি করে হত্যা করেছে। কদমতলী থানা সূত্রে জানা যায়, একটি কালো মোটরসাইকেল করে কবির হোসেনকে অজ্ঞাত তিনজন ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। পরে কবির হোসেনের ঘাড়ে ও ডান হাতের গোড়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে কদমতলী থানা পুলিশ।
পরে নিহতের বড় ভাই মো. নজরুল ইসলাম (৪০) অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে কদমতলী থানায় হত্যা মামলা করেন (মামলা নং-৩৮)। তদন্ত শেষে কামাল ওরফে টিকটিকি কামালকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। কিন্তু আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দেয়। তদন্ত শেষে ডিবি পুলিশও অনুরূপ অভিযোগপত্র দিলে আদালত তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়।
আদালতের আদেশে পিবিআই, ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) পুলিশ পরিদর্শক মো. কামাল হোসেন মামলাটির তদন্ত শুরু করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কদমতলী থানাধীন জুরাইন মেডিকেল রোড হতে টিকটিকি কামালকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইকে টিকটিকি কামাল জানায়, এলাকায় প্রভাব বিস্তার, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজিতে প্রতিপক্ষ ছিল কবির হোসেন। ২০০৯ সালের ১৭ জুন রাতে সহযোগীদের মাধ্যমে শ্যামবাবুর ট্রাক গ্যারেজে কবিরকে ডেকে নেয়া হয়। এ সময় কবিরের সঙ্গে টিকটিকি কামাল, রাসেল ওরফে রাজাকার রাসেল, লিটন ও জসিম উদ্দিনের সঙ্গে চাঁদাবাজির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে তর্ক হয়। এক পর্যায়ে লিটন কবিরকে টেনে গ্যারেজের ভিতর নিয়ে যায়। সেখানেই টিকটিকি কামাল গুলি করে হত্যা করে কবিরকে।
Advertisement
পিবিআই আরও জানায়, টিকটিকি কামাল ও তার সহযোগীরা অস্ত্রের মহড়া দিয়ে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালসহ আশপাশ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করে আসছিল।
জেইউ/এএইচ/এমকেএইচ