রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছে ফিলিপিন্সের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন-আরসিবিসি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, আরসিবিসির বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংক যে মামলা করেছে এতে তারা বেকায়দায় আছে। এজন্যই আরসিবিসি আমাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছে।
Advertisement
আরসিবিসির সঙ্গে সমঝোতার প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, নিউইয়র্কের আদালতের মামলার নিয়ম অনুযায়ী আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এটি অন্যকিছু নয়। আজ (১৩ মার্চ) রাতে আমাদের প্রতিনিধি দল দেশে আসবে তারা সবকিছু বলতে পারবে।
বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন কাংলাদেশ (কেআইবি) জনতা ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন-২০১৯ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।
তিন বছর আগে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের আশায় গত ২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার জবাবে আরসিবিসি মানহানির অভিযোগ এনে গত ৬ মার্চ ফিলিপিন্সের সিভিল কোর্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে পাল্টা একটি মামলা করে বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
Advertisement
ফিলিপিন্সের ব্যাংকটি বলছে, তাদের কোম্পানির সুনাম ও ভাবমূর্তির ওপর বারবার ‘অশুভ আক্রমণ’ চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ কোটি পেসো (১৯ লাখ ডলার) দাবি করা হয়েছে মামলায়।
এক বিবৃতিতে আরসিবিসি বলেছে, ‘টাকা আদায় করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিরাট এক ষড়যন্ত্র শুরু করেছে, সেজন্য তারা আরসিবিসির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে, ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু যে টাকার জন্য এটা তারা করছে, তা কখনোই আরসিবিসির কাছে ছিল না, ওই টাকার দায়ও আরসিবিসির নয়।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ ফেবরুয়ারি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুইফট সিস্টেমে ৭০টি ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১৯২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার অবৈধভাবে নেয়ায় চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে একটি পরিশোধ অর্ডারে শ্রীলঙ্কায় দুই কোটি ডলার ও চারটি অর্ডারে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের একটি শাখার ভুয়া গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়।
শ্রীলঙ্কা থেকে ইতোমধ্যেই চুরি হওয়া সব অর্থ ফেরত এসেছে। ফিলিপাইনে যাওয়া অর্থের মধ্যে এক কোটি ৫০ ডলার দেশটির কোর্টের আদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার অনাদায়ী রয়েছে, যা আরসিবিসির কাছ থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় উদ্ধারের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
Advertisement
এসআই/এমবিআর/এমএস