প্রাথমিকে শিশুদের যাতে ভিত শক্ত হয় এমনভাবে শিক্ষা দেয়ার জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শিশুদের যার যে গুণ আছে, সেটা যেন বিকশিত হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । আজ যে সোনামনিরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়ে পুরস্কার নিলো, ভবিষ্যতে তারাই একদিন আমার মতো প্রধানমন্ত্রী হবে।
Advertisement
আজ (বুধবার) সকালে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় শিক্ষা পদক বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান। স্বাগত বক্তা ছিলেন সচিব আকরাম আল হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষার উন্নয়ন ও সাফল্যের ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এ বছর ১৩ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৯ উদযাপন করা হবে। সপ্তাহটির এবারের প্রতিপাদ্য 'প্রাথমিক শিক্ষার দীপ্তি, উন্নত জীবনের ভিত্তি'।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু শিক্ষা নয়, সেই সঙ্গে শিশুরা যেন খেলাধুলা করতে পারে সে ব্যবস্থাও নিতে হবে শিক্ষকদের। লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুদের শারীরিক গঠনও যেন হয় সেদিকেও যত্ন নিতে হবে । প্রতিবন্ধী, অটিজম শিশুদের অবহেলা করা যাবে না। তাদের দায়িত্ব নিতে হবে সুস্থ শিশুদের । বন্ধু হিসেবে একসঙ্গে যেন তারা লেখাপড়া করতে পারে সে দায়িত্বও শিক্ষকদের নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বই দিচ্ছি, বৃত্তির টাকা দিচ্ছি, টিফিন দিচ্ছি। ফলে স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে যত টাকা লাগে আমরা দিচ্ছি। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষার মান যেন বৃদ্ধি পায়।
২০৪১ সালে আমরা উন্নত, সমৃদ্ধ ও মেধাসম্পন্ন জাতিতে পরিণত হব -এমন আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এবং আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে মানসম্মত ও জীবনমুখী শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম হব এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির পথে।
তিনি বলেন, আমরা ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই দিচ্ছি। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে মোট ৩৫ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮২টি বই বিতরণ করা হয়েছে।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্লাস ওয়ানে ভর্তি পরীক্ষায় ছাপানো প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয় কেন? এ পদ্ধতি বন্ধ করতে হবে। এটা রীতিমত শিশুদের উপর নির্যাতন। এ বিষয়টি শিক্ষকদের ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
পিইসি পরীক্ষা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটা সার্টিফিকেট পায়। তাছাড়া একবারে প্রথমবারের মতো এসএসসিতে বোর্ড পরীক্ষায় না বসে তার আগে আরও দুটি বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নেয়ায় তাদের মধ্যে সাহস বাড়ে। ফলে এসএসসিতে কেউ নার্ভাস হয় না।
এফএইচএস/এমএমজেড/জেআইএম