বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এই মামলায় আজ (বুধবার) তার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ ছিল আদালতের।
Advertisement
বুধবার রাজধানীর বকশিবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে অবস্থিত ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এ এইচ এম রুহুল ইমরানের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। মামলার আসামি খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির না করায় কাস্টডি পাঠায় কারা কর্তৃপক্ষ। সিনিয়র জেল সুপার স্বাক্ষরিত কাস্টডিতে লেখা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট বন্দী বিজ্ঞ আদালতে যেতে অনিচ্ছুক।’
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেরন কাজল বলেন, মামলাটি অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। আমরা মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানি করতে চায়।
অপরদিকে খালেদার আইনজীবী মাসুদ তালুকদার বলেন, আমরা মামলাটির সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পাইনি। কাগজপত্র চেয়ে আবেদন করেছি। অপরদিকে মামলার আসামি খালেদা জিয়া ও আমিনুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করছি।
Advertisement
আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির জন্য ৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি করা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান (মৃত), সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া (মৃত), সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী (মৃত), সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মো. মুজাহিদ (মৃত), ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার (মৃত), এম শামসুল ইসলাম (মৃত), আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুদকের দায়ের করা দুই মামলায় ১০ ও ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। আপিলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড বেড়ে ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতে ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি।
Advertisement
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়। সেখান থেকেই গত ৬ অক্টোবর চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেয়া হয়। টানা এক মাস ২ দিন বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসা নেয়ার পর ফের তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
জেএ/এনডিএস/এনএফ/জেআইএম