নির্বাচন ঘিরে জমে উঠেছে দেশের আইনজীবীদের অন্যতম সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির প্রচার-প্রচারণা। সুপ্রিম কোর্ট বারে দুই দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ বুধবার সকালে শুরু হবে।
Advertisement
এবারের নির্বাচনে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে অংশগ্রহণ করছে সরকারপন্থী আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ও বিএনপিপন্থী জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আইনজীবীরা।
নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। সুপ্রিম কোর্ট চত্বর ও আইনজীবী সমিতি ভবন এলাকায় প্যানেলের পক্ষে চলছে জমজমাট প্রচারণা। নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীদের সমর্থন ও প্রচারণায় জমে উঠেছে আদালতপ্রাঙ্গণ। সবার মধ্যেই বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ।
নির্বাচনে ১৪টি পদের বিপরীতে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে সরকার সমর্থিত সাদা প্যানেল এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল। এ ছাড়া স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে দু’জন, সদস্য পদের জন্য একজনসহ মোট ৩৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
Advertisement
সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের বসার কক্ষে, চেম্বারে, সিনিয়র-জুনিয়র মিলে সমান তালে চলছে প্রচার-প্রচারণা। এ ছাড়াও ছোট ছোট লিফলেট, নির্বাচনী কার্ড, ফেসবুক ও মোবাইলের এসএমএসসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়াই চলছে ভোট প্রার্থনা।
ভোটের আগেরদিন মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকালে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে কার্যক্রম শুরুর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের প্রার্থী এবং তাদের সর্মথক আইনজীবীরা দলবেঁধে প্রচার-প্রচারণা চালায়।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০১৯-২০ মেয়াদের নির্বাচনে ১৪ পদের বিপরীতে ৩৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও নির্বাচনে মূল লড়াই হবে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থক জাতীয়তাবাদী ঐক্য জোটের মধ্যে। এবার বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা নিজ দলের অবস্থান ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এদিকে হারানো ইমেজ পুনরুদ্ধার করতে আপ্রাণ চেষ্টায় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ও তাদের মিত্ররা।
এ বিষয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির জাগো নিউজকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় আইনজীবীদের পরামর্শ দিয়েছেন। এতে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজের মাধ্যমে নিজেদের অনুকূলে ফলাফল আনার আহ্বান জানিয়েছেন। আমরাও আশা করছি, ফলাফল আমাদের পক্ষে আসবে।’
Advertisement
সুপ্রিম কোর্ট বারের সুপারইন্টেনডেন্ট (তত্ত্বাবধায়ক) নিমেষ চন্দ্র দাস জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এ ওয়াই মশিউজ্জামান। তার নেতৃত্বে একটি সাব-কমিটি দায়িত্ব পালন করছে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমার দিন ধার্য ছিল। মনোনয়ন প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষে এখন চূড়ান্তভাবে ৩৩ জন প্রার্থী রয়েছেন। আগামীকাল ১৩ এবং ১৪ মার্চ সকাল ১০টা থেকে মাঝে ১ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এরপর গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হবে।
ভোটগ্রহণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। সুপ্রিম কোর্ট বারের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে বুথ তৈরি করা হচ্ছে। নিমেষ চন্দ্র দাস বলেন, ‘আজকের (মঙ্গলবার) মধ্যেই ভোটগ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।’
প্রতি বছর সুপ্রিম কোর্ট বারের কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৭টি সম্পাদকীয় ও ৭টি নির্বাহী সদস্যের পদ রয়েছে।
এবারের নির্বাচনে সাদা প্যানেল থেকে সভাপতি পদে সমিতির সাবেক সম্পাদক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন (এ এম আমিন উদ্দিন) ও সম্পাদক পদে বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক সম্পাদক আইনজীবী আবদুন নুর দুলালের নেতৃত্বে ১৪ জনের একটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
নীল প্যানেলে বারের সাবেক সভাপতি ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী এবং সম্পাদক পদে টানা ছয়বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহাবুব উদ্দিন খোকনের নেতৃত্বে ১৪ জনের একটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন পদে স্বতন্ত্রপ্রার্থীও রয়েছেন।
তবে সংগঠনের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা প্যানেল দেয়া হলেও সুপ্রিম কোর্ট বার এলাকায় প্রার্থীদের একই ধরনের প্রচারপত্র ও কার্ড দিয়ে প্রচারণা চালাতে আচরণবিধি রয়েছে। সে অনুযায়ীই প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এফএইচ/এমএসএইচ/এনডিএস/বিএ