জাতীয়

সিএজির যেসব দুর্নীতির শিকার সরকারি চাকরিজীবীরা

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৩৩টি খাতে দুর্নীতি হয়। এর মধ্যে দেশের সরকারি নিরীক্ষার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) কার্যালয়ের দুর্নীতির চিত্রই প্রকট। এ কার্যালয়ের দুর্নীতির অধিকাংশ ভুক্তভোগী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী।

Advertisement

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খানের হস্তান্তর করা এক প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি জানা গেছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) অর্থমন্ত্রীর কার্যালয়ে গতকাল এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়।

দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ কার্যালয়ের যেসব দুর্নীতিতে সরকারি চাকরিজীবীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় সেগুলো হলো-

>> সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলিজনিত কারণে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করার পর হিসাবরক্ষণ দফতর থেকে শেষ বেতনপত্র (এলপিসি) নতুন কর্মস্থলে পাঠানোর বেলায় বিলম্ব হওয়া। একইসঙ্গে এর মাধ্যমে অনৈতিকভাবে আর্থিক লেনদেন।

Advertisement

>> সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার সময় সর্বশেষ হিসাবরক্ষণ দফতর থেকে তার প্রত্যাশিত শেষ বেতনপত্র (ইএলপিসি) ইস্যুর ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্ব।

>> কর্মকর্তাদের সার্ভিস স্টেটমেন্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে হয়রানিমুক্ত সেবা না দেয়া।

>> কর্মচারীদের সার্ভিস বুক ভেরিফিকেশনের বেলায় অনিয়মিতভাবে অর্থ আদায় করা।

>> কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সিলেকশন গ্রেড বা টাইমস্কেলে বেতন নির্ধারণের পর এরিয়ার বিল দাখিল করা হলে অনিয়মিতভাবে আর্থিক সুবিধা আদায়।

Advertisement

>> কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পে-ফিক্সেশনের বেলায় অনৈতিকভাবে আদায় করা হয় আর্থিক সুবিধা।

>> কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ তহবিল (জিপিএফ) হিসাব খোলার সময় অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়।

>> জিপিএফ অগ্রিমের অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে অনৈতিকভাবে অর্থ সুবিধা আদায় করা হয়।>> জিপিএফ হিসাব হতে চূড়ান্ত অর্থ পরিশোধের বেলায়ও অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধার দাবি করা হয়ে থাকে।

>> সরকারি বিভিন্ন অগ্রিম যথা- গৃহনির্মাণ, গাড়ি, মোটরসাইকেল, কম্পিউটার ইত্যাদির বিলের অর্থ প্রাপ্তিতে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা প্রদানে বাধ্য করা।

>> সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকসহ কর্মচারীদের পেনশন সংক্রান্ত আনুতোষিক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়।

>> শ্রান্তি বিনোদন ভাতার বিল উত্তোলনের বেলায় অনৈতিকভাবে অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

>> বিল দাখিলের ক্ষেত্রে টোকেন প্রদানের সময় হয়রানির শিকার।

>> সরকারি চাকরিতে নবনিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রথম বেতন বিলের টাকা প্রাপ্তিতে অনিয়মিত অর্থ প্রদান করতে হয়।

>> ভুয়া পেনশন সংক্রান্ত বিল পরিশোধের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়ে থাকে।

>> ভুয়া ভ্রমণ ভাতা বিল পরিশোধের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়ে থাকে।

>> উন্নয়ন প্রকল্প হতে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের বেলায় অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়। >> নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশনা অমান্য করে সরকারি সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি।

এমইউএইচ/জেডএ/এমএস