জাতীয়

৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে জামালপুরে হচ্ছে ‘শেখ হাসিনা নকশিপল্লী’

নকশি উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। হস্তশিল্প, কারুশিল্প, কুটিরশিল্প, তাঁতিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। করা হবে তাদের দারিদ্র্য বিমোচন। সেই সঙ্গে নকশি শিল্পের টেকসই উন্নয়নে জামালপুরে হচ্ছে শেখ হাসিনা নকশিপল্লী।

Advertisement

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। আয়-ব্যয় বিশ্লেষণ ছাড়াই ‘শেখ হাসিনা নকশিপল্লী, জামালপুর (প্রথম পর্যায়)’ নামের প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে একনেক সভায়।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প জামালপুর সদর ও মেলান্দহ উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের পুরো অর্থই বহন করবে সরকার।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘নকশিকাঁথা, নকশি শাড়ি, চাদর, নকশি টেবিল ক্লথ যেগুলোর বিদেশে ভালে বাজার আছে। আপনারা যদি ইউরোপে যান, তাহলে অবাক হবেন যে, পাট ও হ্যান্ডলুমের অনেক জিনিস। হাতে নিয়ে দেখি সেগুলো লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামের। আমি কষ্ট পাই। আমরা করতে পারি। আমাদের প্রচুর পাট আছে। এজন্য এখানে গবেষণা হবে, প্রশিক্ষণ হবে, উৎপাদন হবে। প্রশিক্ষণ এই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ১১শ’ তাঁতি এখানে বসবাস করবে এবং কাজ শিখবে। এটা একটা বৃহৎ প্রকল্প।’

Advertisement

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এর উদ্দেশ্য হলো- উন্নত পরিবেশে নকশি উদ্যোক্তা, হস্তশিল্প, কারুশিল্প, কুটির শিল্প এবং তাঁতিদের জন্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা। নকশি শিল্প ও তাঁতিদের দারিদ্র্য বিমোচন এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা। নকশি শিল্পের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ভূমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়নসহ আনুষঙ্গিক কার্যাদি শেষ করা।

এই প্রকল্পের আওতায় ৩০০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমির উন্নয়ন, আবাসিক ভবন নির্মাণ, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং বিদ্যুতায়ন করা হবে।

প্রকল্পের যৌক্তিকতায় বলা হয়েছে- আবহমানকাল থেকেই বাংলার ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দৃশ্যাবলী সংবলিত নকশিকাঁথার চাহিদা দেশব্যাপী। নকশিকাঁথা জামালপুর জেলার ব্র্যান্ড হিসেবে আখ্যায়িত। জামালপুরের বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ ও সদর উপজেলাতেই নকশিকাঁথা শিল্পের কম-বেশি উৎপাদন হয়। বর্তামনে জামালপুরের সবগুলো উপজেলাতেই এ শিল্পের কাজ হচ্ছে এবং প্রায় ৩০০ প্রতিষ্ঠান/উদ্যোক্তা গড়ে উঠেছে।

অপরদিকে পার্শ্ববর্তী শেরপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, শেরপুর জেলার ৭৬ জন নকশি উদ্যোক্তা এবং তিন হাজার ৯৮৫ জন নকশি শিল্পী রয়েছে। জামালপুর ও শেরপুর জেলায় প্রায় ২৬১টি তাঁতী পরিবার বসবাস করে এবং ৩০৫টি পিট/চিত্তরঞ্জন ও ২০০টি জামদানি তাঁত বিদ্যমান আছে। কিন্তু নানা প্রতিকূলতার কারণে উক্ত এলাকায় এ শিল্পটির তেমন প্রসার ঘটেনি। বর্তমানে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের আর্থিক অনটন, বিপণন সমস্যা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ব্যবসা প্রসারের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এ শিল্পটিকে সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা হলে শিল্পটি আবার তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারে।

Advertisement

পিডি/এমবিআর/জেআইএম