কথায় আছে, ‘পুরান চাল ভাতে বাড়ে’ - বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতি মৌসুমে এ কথারই প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রকিবুল হাসান। প্রতি বছর ছাড়িয়ে যাচ্ছেন নিজেকেই। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেলেন ৩১ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার।
Advertisement
চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচে রকিবুলের অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংসে ভর করে গাজীগ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছিল মোহামেডান। সে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির বিপক্ষে ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে মোহামেডানকে ৪ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন অধিনায়ক রকিবুল।
মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ২২৫ রানে অলআউট হয় খেলাঘর। এত অল্প রানের পুঁজি নিয়েও মোহামেডানের ওপর চেপে বসেছিল খেলাঘরের বোলাররা। তবে দায়িত্বশীল ব্যাটে সে চাপ হটিয়ে ৪ বল হাতে রেখেই দলকে জয় পাইয়ে দিয়েছেন মোহামেডান অধিনায়ক।
২২৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৬৪ রান যোগ করেন দুই ওপেনার অভিষেক মিত্র এবং আব্দুল মজিদ। কিন্তু দুজন মিলে খরচ করে ফেলেন ১৯.২ ওভার। মজিদ ৬৮ বলে ৪০ এবং অভিষেক ৫১ বলে করেন ২৭ রান।
Advertisement
ইনিংসের ২৬তম ওভারের শেষ বলে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ইরফান শুক্কুর (১৬) যখন সাজঘরে ফেরেন, তখন দলের সংগ্রহ মাত্র ৯৭ রান। চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আশরাফুল এবং রকিবুল ইসলাম।
কিন্তু প্রথম রাউন্ডের মতো আবারও হতাশ করেন আশরাফুল। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে তিন সাজঘরে ফেরেন মাত্র ১০ রান করে। তখনও মোহামেডানের জয়ের জন্য বাকি ১০৪ রান। তখনই মূলত জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জুটিটা পায় তারা। যেখানে দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান অধিনায়ক রকিবুল এবং ঘরোয়া ক্রিকেটের পরীক্ষিত সেনানী নাদীফ চৌধুরী।
দুজন মিলে পঞ্চম উইকেটে গড়েন ৭৪ বলে ৮৩ রানের জুটি। ৩৮ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কার মারে ৩৯ রানে আউট হন নাদীফ। তবে লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারে নিজের ৩৮তম ফিফটিতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন রকিবুল।
তবে অতোটা সহজ ছিলো না জয়ের পথ। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ৯ রান। প্রথম বলটি ওয়াইড করেন ইরফান হোসেন। পরের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সমীকরণটা ৫ বলে ২ রানে নামান রকিবুল। ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে জয়টাই নিশ্চিত করে দেন অধিনায়ক রকিবুল।
Advertisement
শেষপর্যন্ত ৮ চার এবং ১ ছক্কার মারে ৮৮ বলে ৮৪ রানে অপরাজিত থাকেন রকিবুল। অবধারিতভাবে ম্যাচসেরার পুরষ্কারটাও ওঠে তারই হাতে।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় বড় সংগ্রহ পায়নি খেলাঘর। সবার অন্ধকারের মাঝেও আলো ছড়িয়েছে মোসাদ্দেক ইফতেখারের ব্যাট। ইনিংসের ৪৬তম ওভারে রানআউটে কাঁটা পড়ার আগে ১১৩ বলে ৮৭ রান করেন তিনি।
এছাড়া অমিত মজুমদার ৩৭, অশোক মেনারিয়া ২৬ এবং রবিউল ইসলাম রবির ব্যাট থেকে আসে ১৯ রানের ইনিংস। নির্ধারিত ৫০ ওভারের ১৫ বল বাকি থাকতেই ২২৫ রানে অলআউট হয় খেলাঘর। মোহামেডানের পক্ষে বল হাতে সোহাগ গাজী নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া ইনজুরিতে মাঠ ছাড়ার আগে কাজী অনিক নেন ২ উইকেট।
এসএএস/এমএস