২০০৩ সালের মে থেকে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। এরই মধ্যে এক যুগ পার হয়ে গেছে। এই ১২ বছরে অনেকেই ঝরে গেছেন, মারা গেছেন, কেউ মূল দল আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। এরপরও কেন্দ্র থেকে সম্মেলন করার কোনো কথা আজও জানানো হয়নি। কবে জানাবে তাও কেউ বলতে পারেন না, এখন যদি অন্ততঃ আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়া হয়, তাহলে খুব ভলো হয়। এভাবেই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন খুলনা জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান জামাল এবং সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু। অন্যদিকে, মূল দলে যেতে আগ্রহী জেলা যুবলীগের সভাপতি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির আগে যুবলীগের সম্মেলন হলে তা খুবই ভালো হয়। এ দুজন ছাড়া জেলা যুবলীগের আর কেউ সক্রিয় আছেন বলে মনে করেন না কেউ।দীর্ঘ এক যুগ সম্মেলন না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে পড়েছেন খুলনার যুবলীগের তৃণমূল থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মী। নেতৃত্ব প্রত্যাশী এসব ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মী মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা, অগঠনতান্ত্রিক মনোভাব ও পেশী শক্তি ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালের ২৫ মে। সম্মেলনে মো. কামরুজ্জামান জামাল সভাপতি ও মো. আক্তারুজ্জামান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়। সেই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ১০ বছর আগেই। তথাপি আজও নতুন করে কোনো কমিটি গঠিত হয়নি। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে জেলা যুবলীগ।তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন না হওয়ায় নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন যুবলীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী। জেলা যুবলীগের সাতজন সহ-সভাপতির স্থলে বর্তমানে সক্রিয় আছেন মাত্র তিনজন। বাকি চারজনের মধ্যে একজন বিদেশে, একজন অসুস্থ এবং অপর দুইজন ব্যক্তিগত কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে একজন বিদেশে ও একজন জেলার বাইরে অবস্থান করছেন। এছাড়াও কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর অধিকাংশ সদস্যই রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। জেলা যুবলীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির ভারপ্রাপ্ত প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জলিল তালুকদার জাগো নিউজকে জানান, দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় জেলা যুবলীগ একটি মৃত লাশে পরিণত হয়েছে। সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল থাকায় আগামীতে কোনো আন্দোলন হলে তা মোকাবেলায় এবং দলের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে না। অবিলম্বে এই কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। একইভাবে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন বর্তমান মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম কামরুজ্জামান।তবে দীর্ঘ সময়ে সম্মেলন না হওয়ার ব্যাপারে জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান জামাল জানান, যুবলীগের কমিটি গঠন হওয়ার পর দীর্ঘ সময় পার হয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পার করতে হয়েছে। যে কারণে যথাসময়ে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। তবে নতুন নেতৃত্ব বিকাশে সম্মেলন করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।আলমগীর হান্নান/এমজেড/এমআরআই
Advertisement