ক্যাম্পাস

র‌্যাগিংয়ে অসুস্থ ১২ শিক্ষার্থী, ৯ জনকে বহিষ্কার

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রথম বর্ষের ১২ জন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং, যৌন নিপীড়ন ও বিকৃত যৌনচারে বাধ্য করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় নয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

Advertisement

এদের মধ্যে দুইজনকে আজীবন, একজনকে দুই বছর এবং অপর ছয়জনকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাদের অপরাধের বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ও ভুক্তভোগী সবাই যবিপ্রবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীবের সই করা এক অফিসে আদেশে তাদের বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

এর আগে র‌্যাগিং, যৌন নিপীড়ন এবং বিকৃত যৌনাচারে বাধ্যকরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগী ১২ জনসহ মোট ৪০ জন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পায়।

Advertisement

একই সঙ্গে যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের সঙ্গেও তদন্ত কমিটি কথা বলে। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীরা তদন্ত কমিটির সঙ্গে অসংলগ্ন, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তদন্ত কমিটি দেখে যে, র‌্যাগিংয়ে জড়িত শিক্ষার্থীরা যে অপরাধ করেছে এ বিষয়ে তারা যথাযথ অনুতাপ বা দুঃখ প্রকাশ করেননি।

একই সঙ্গে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করায় র‌্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারে বাধ্য করানো হয়। এ সংক্রান্ত ফোনকলের রেকর্ডও তদন্ত কমিটির হাতে রয়েছে।

এছাড়া র‌্যাগিংয়ের শিকার হওয়া একজন শিক্ষার্থী ঘটনার পর থেকে চিকিৎসাধীন। ভুক্তভোগী অন্যরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং স্বাভাবিক হতে পারছেন না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে র‌্যাগিং রোধ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আচরণবিধি অনুযায়ী তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

আজীবন বহিষ্কৃতরা হলেন- দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. অলি উল্লাহ ও মাহমুদুল হাসান, দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রজিবুল হক রজব, এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আবদুল কাদের, দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল মুজাহিদ আফ্রিদি, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. রোকনুজ্জামান রোকন, অনুপ মালাকার এবং মো. শামীম বিশ্বাস।

Advertisement

একই সঙ্গে এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু বক্কর সিদ্দিকী, দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শতদল পাল ও ইমরান হোসেনকে চূড়ান্তভাবে সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকাকালীন র‌্যাগিংসহ শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে না মর্মে- সাতদিনের মধ্যে তাদের অভিভাবকরা এবং নিজেরা ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা না দিলে তাদেরকেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানানো হয়।

মিলন রহমান/এএম/জেআইএম