দেশজুড়ে

যশোর পৌরসভার ৬২টি সড়ক চলাচলের অযোগ্য

যশোর শহরের ৯৩টি রাস্তার মধ্যে ৬২টিই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।এসব রাস্তায় বিটুমিন, কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় অনেক রাস্তায় রিকশা পর্যন্ত যেতে চায় না। দেড়শ বছরের এই পুরাতন পৌরসভার রাস্তাঘাটের এই দৈন্যদশায় শহরবাসী চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন। আর রাস্তাঘাটের এই দুরাবস্থার একটি প্রতিবেদন গোয়েন্দা বিভাগ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণ করেছে।এতে অধিকাংশ রাস্তা পুনঃনির্মাণ প্রয়োজন বলে মতামত দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সর্বশেষ আইনশৃংখলা মিটিংয়ে রাস্তাঘাটের এই করুণ চিত্র নিয়ে কথা বলেছেন কমিটির সদস্যরা। এসভা থেকে রাস্তা সংস্কারে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, চলাচল অনুপযোগী ৬২টি রাস্তা মেরামত করেও আর উপযোগী করা সম্ভব নয়। সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে পুনঃনির্মাণ প্রয়োজন।এরমধ্যে এক নম্বর ওয়ার্ডে ৬টি, দুই নম্বর ওয়ার্ডে ১২টি, তিন নম্বর ওয়ার্ডে ৮টি, চার নম্বর ওয়ার্ডে ১১টি, পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪টি, ছয় নম্বর ওয়ার্ডে ১৭টি, সাত নম্বর ওয়ার্ডে সাতটি, আট নম্বর ওয়ার্ডে ১১টি, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৭টি রাস্তার বিটুমিন উঠে গিয়ে স্থানে স্থানে খানা-গর্তে ভরে গেছে। এ রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কার করা জরুরি বলে পৌরসভা মনে করলেও অর্থের অভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। আর এ কারণে বর্তমানে পৌর পরিষদের মেয়াদে শহরবাসীর দুর্ভোগ ঘোচার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন পৌরসভার একাধিক কাউন্সিলর। সূত্র মতে, পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের চিত্রা মোড় থেকে ঈদগাহ মোড় পর্যন্ত ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৩১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। টিবি ক্লিনিক এলাকার এম এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করেন। শহরের অতিগুরত্বপূর্ণ এ রাস্তাটিও নষ্ট হয়ে গেছে। এটি মেরামত করার প্রয়োজন বলে পৌরসভা প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে পাঠানো প্রতিবেদনে মতামত দিয়েছে। একই অর্থ বছরে করা গুরুদাস বাবু লেন, নীলরতন ধর রোড, হরিনাথ দত্ত লেন (নিরালাপট্টি), বেজপাড়া গয়ারাম সড়ক, বেজপাড়া বিহারী কলোনী সড়ক, বেজপাড়া মেইন রোড, আজিমাবাদ কলোনী সড়ক, পিয়ারীমোহন রোডসহ অনেক রাস্তা জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করে জনদুর্ভোগ লাঘাব করা প্রয়োজন বলেও মতামত দেয়া হয়েছে। এদিকে, চলতি বছরেই বর্তমান পরিষদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। শেষ বাজেট হিসেবে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের জন্য পাশ হওয়া ১২০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বাজেটে প্রায় ৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে বাজেটে বরাদ্দ এ উন্নয়নের অর্থদাতা সংস্থার উপর নির্ভরশীল বলে তা বাস্তবায়নের অনশ্চিয়তা থাকছে। যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ জাহাঙ্গীর আহম্মেদ শাকিল বলেন, বর্তমানে কিছু রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় ফান্ড না থাকায় ভাঙাচোরা সব রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলমেন্ট ফান্ডের ১৭ লাখ টাকা ঋণ অপরিশোধিত আছে। পৌরসভা এ শর্ত পূরণ করতে পারলে ‘তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ’ (ইউজিপ-৩) শীর্ষক প্রকল্পের প্রায় ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ পাবে।তখন আরও কিছু রাস্তা সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করা সম্ভব হবে।মিলন রহমান/এমএএস/আরআইপি

Advertisement