দু’দফা বৃষ্টিতে আলুর ক্ষতি হওয়ায় শরীয়তপুরের কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। জমিতে বৃষ্টির পানি জমে যাওয়ায় কাদার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে আলু পচে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। শরীয়তপুরে কোন হিমাগার না থাকায় আলু সংরক্ষণও করতে পারছেন না কৃষকরা।
Advertisement
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, এ মৌসুমে শরীয়তপুরে এক হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৫০ মেট্রিকটন। ডিসেম্বর মাস থেকে কৃষকরা জমিতে আলুর আবাদ শুরু করেন। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এলাকার কৃষকরা জমি থেকে আলু উঠাতে শুরু করে। এমন সময় বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। বৃষ্টিতে ৭৫ হেক্টর জমির আলু আক্রান্ত হয়েছে।
গত সপ্তাহে চার দিন ও চলতি সপ্তাহে একদিন বৃষ্টি হওয়ায় জমি থেকে আলু উঠাতে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া হিমাগার না থাকায় উঠানো আলু সংরক্ষণ করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে কম দামে ফরিয়াদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে।
> আরও পড়ুন- আলুর অর্ধেক দামে হতাশ চাষিরা
Advertisement
ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের শিবসেন গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। জমি থেকে আলু উঠানোর আগেই বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি জমে কাদার সৃষ্টি হওয়ায় আলুর ক্ষতি হতে থাকে।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘জমিতে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। দ্রুত আলু উঠানোর চেষ্টা করছি। বৃষ্টির পানির কারণে ৫০ শতাংশ আলু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবছর আলু চাষ করে ক্ষতির সম্মুখীন হলাম।’
নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এনায়েত মৃধা বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলে অনেক আলু উৎপাদন হয়। কিন্তু তা সংরক্ষণ করার কোন ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টির কারণে আলু দ্রুত জমি থেকে উঠাতে হচ্ছে। কিন্তু সংরক্ষণ করতে না পেরে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
> আরও পড়ুন- বিনা চাষে আলুর ফলন পেতে
Advertisement
মুন্সিকান্দি গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন বলেন, ‘জমিতে পানি জমেছে, দ্রুত আলু উঠাতে হচ্ছে। সংরক্ষণ করতে না পেরে কম দামে ফরিয়াদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছি। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ৭-৮ টাকা দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক রিফাতুল হোসাইন বলেন, ‘আমরা ক্ষতির একটি তালিকা ঢাকায় পাঠিয়েছি। কৃষক আলু সংরক্ষণ করতে পারলে কিছু ক্ষতি কমানো যেত। কিন্তু হিমাগার না থাকায় কৃষক সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
মো. ছগির হোসেন/এসইউ/পিআর