হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে এক মাদক ব্যবসায়ী র্যাব সদস্যদের উদ্দেশে দম্ভোক্তি করে বলেছেন ‘পিস্তল আছে গুল্লি নাই, তোরা ভুয়া র্যাব’। সোমবার রাতে ওই উপজেলার উত্তর গজনাইপুর গ্রামের বিজনা নদীর তীরবর্তী মাদক ব্যবসায়ী হাসনা বেগমের বাড়িতে অভিযানে গেলে র্যাব সদস্যদের তিনি এ কথা বলেন। একপর্যায়ে তাদেরকে বটি দা নিয়ে ধাওয়াও করেন হাসনা বেগম। পরে র্যাব সদস্যরা হাসনা বেগম ও তার সহযোগী মিজানুর রহমানকে আটক করতে সক্ষম হয়।
Advertisement
এ সময় হাসনা বেগমের ঘর থেকে ৫৭০ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির নগদ এক লাখ ২৭ হাজার ৩৬৭ টাকা জব্দ করা হয়। র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এর আগেও বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে এ সিন্ডিকেটকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছিল না। 'ডাকাত ডাকাত' বলে চিৎকার করে র্যাব সদস্যদেরকে স্থানীয় প্রতিরোধের মুখে ফেলার রেকর্ডও আছে তাদের। অবশেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ব্লকরেইড দিয়ে ইয়াবা এবং এক সহযোগীসহ তাকে আটক করা সম্ভব হল।
র্যাব জানায়, উত্তর গজনাইপুর গ্রামের বিজনা নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা হাসনা বেগম দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ইয়াবা ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। স্বামী রুয়েল মিয়ার মৃত্যুর পর সন্তানহীন এ নারী ইয়াবা ব্যবসাতে পূর্ণ মনযোগ দেন। প্রথমে বড় ডিলারদের কাছ থেকে দুই-চার পিস কিনে খুচরা বিক্রি করতেন। এক সময় নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন ইয়াবার বাজার। ভাই শারজানকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলেন বিশাল ইয়াবা সিন্ডিকেট। দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগে নিজ বাড়িতে এ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন।
Advertisement
বিভিন্ন সময় র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে অভিযানে গেলে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করতেন। ফলে অভিযান তেমন সফল হয়নি। সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার আস্তানায় ফের অভিযান চালায় র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের সদস্যরা। এ সময় তাদের ঘায়েল করতেও তিনি একই কৌশল নেন। দম্ভোক্তি করে বলেন ‘পিস্তল আছে, গুল্লি নাই, তোরা ভুয়া র্যাব’। কোনো কিছুতেই কাজ না হলে তিনি বাটি নিয়ে তাদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালান। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মুরব্বিদের সহায়তায় র্যাব সদস্যরা তাকে আটক করে। পরে তার ঘর তল্লাশি চালিয়ে ৫৭০ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির নগদ এক লাখ ২৭ হাজার ৩৬৭ টাকা জব্দ করা হয়। অভিযানের আগেই পালিয়ে যান হাসনার ভাই শারজান মিয়া।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/আরএআর/এমকেএইচ