জাতীয়

‘সংখ্যালঘু কমিশন’ গঠনের দাবি পূরণে আইনমন্ত্রীর আশ্বাস

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি মন্ত্রিপরিষদ সভায় উপস্থাপনের আশ্বাস দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এটি কেবল সময়ের ব্যাপার। এই দাবি পূরণ হবেই।

Advertisement

সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা : সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি ওঠেনি। পঁচাত্তরের পর দীর্ঘ সময় সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হওয়ায়, তাদের মধ্যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকে এই দাবি উঠেছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ একুশ বছর বিচার পাওয়ার জন্য বিচার বিভাগের কাছেও যেতে পারেনি সংখ্যালঘুরা।

তিনি বলেন, এখন অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মানবাধিকারের ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য এই কমিশন গঠনের দাবি উঠেছে। আদালতে বিচারাধীন সংখ্যালঘুদের মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেজন্য প্রোসিকিউশনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলবেন বলেও জানান মন্ত্রী।

Advertisement

অনুষ্ঠানের বাইরে সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আগামী এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বৈষম্য বিরোধী আইন উপস্থাপনের লক্ষ্যে আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার সংক্রান্ত আইন সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, আইনটি মন্ত্রিপরিষদের সভায় উপস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে। খুব শিগগিরই এটা মন্ত্রিপরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হবে।

দেশে সংখ্যালঘুদের দীর্ঘ ২৬ বছরে (১৯৭৫-২০০৬) বিচারের হাহাকার থেকেই জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি উঠেছে মন্তব্য করে আনিসুল হক বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের মামলাগুলোর বিচার তরান্বিত করতে না পারলে কমিশন গঠন করে কোনো ফল হবে না। তাছাড়া এই মামলাগুলোর বিচার হলে কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তাও থাকবে না বলে জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, আলোচনার বিষয় ছিল, ‘নির্বাচনী ইশতেহারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা : সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’। কিন্তু সংখ্যালঘুদের জন্য কমিশনের দাবি কেন উঠল? দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু যখন দেশে ফিরলেন, সংবিধান দিলেন এমনকি দেশ পরিচালনা করছিলেন তখনও কিন্তু এ রকম কোনো কমিশন গঠনের দাবি ওঠেনি।

Advertisement

৪৮ বছর পরে এই কমিশনের দাবি কেন? এই কমিশনের দাবি উঠেছে মূলত ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের কালরাতের পরে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের পাঁচ বছরসহ, ২৬ বছরে সংখ্যালঘুদের উপর যে নির্যাতন চলেছে, তার বিরুদ্ধে সেই সময়ে কেউ কথা বলতে পারতো না। কোনো বিচার পায়নি তারা। আজকে এই পুঞ্জিভূত অপরাধগুলো এমন একটা অবস্থায় গেছে, যেখানে বিচারের হাহাকারের কারণেই কমিশন গঠনের দাবি উঠেছে বলে জানান মন্ত্রী।

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিচারপতি শামসুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। আলোচনা করেন মহানাম সম্প্রদায়ের সভাপতি শ্রীমৎ কান্তিবন্ধু ব্রহ্মচারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান তপন ডি রোজারিও, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় প্রমুখ।

এফএইচ/এমএসএইচ/পিআর