সময়ে কত নিয়ম-কানুনই না পাল্টে যায়! এক সময় বিশ্বকাপের দুই মাস আগে ৩০ জনের প্রাথমিক খেলোয়াড় তালিকা জমা দেয়া ছিল বাধ্যতামূলক। সেটা এখন সময়ের ব্যবধানে আর বাধ্যতামূলক নয়।
Advertisement
তবে আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধার জন্যও বিশ্বকাপের প্রতিযোগী দলগুলো ঠিকই ৩০ জনের নাম জমা দেবে আইসিসির কাছে। সেটা মূলত দলগুলোর বিশেষ সুবিধার কথা চিন্তা করে।
অনেক সময় বিশ্বকাপের মূল দল চূড়ান্ত করার পরও কোনো কোনো ক্রিকেটার ইনজুরিতে পড়েন। তখন তাদের বিকল্প ক্রিকেটার দলে ভেড়াতে হয়। শেষ সময়ে সেই সব ক্রিকেটারের ভিসা, তাদের বিশ্বকাপ জার্সি, হোটেল বুকিং এবং অ্যাক্রিডিটেশনসহ আনুষঙ্গিক বিষয় ঠিক করতে যেন কোনো সমস্যা না হয়, তাই বাড়তি ক্রিকেটারের নাম অন্তর্ভুক্ত রাখা হয়।
কোন ক্রিকেটার ইনজুরির শিকার হলে কিংবা কোন ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কারণে শেষ মুহূর্তে যেতে না পারলে জমা দেয়া তালিকার মধ্য থেকে যাতে বিকল্প ক্রিকেটার নেয়া যায়, সে চিন্তা থেকেই আসলে ৩০ জনের প্রাথমিক খেলোয়াড়ের তালিকা চায় আইসিসি এবং দলগুলোও শেষ মুহূর্তে বিকল্প ক্রিকেটারের অন্তর্ভুক্তিতে যাতে ভোগান্তি না হয়, তাই একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রাথমিক দলের খেলোয়াড় তালিকা আইসিসির কাছে জমা দিয়ে রাখে।
Advertisement
এতকাল তার জন্য একটা বাধাধরা সময় নির্ধারিত ছিল; কিন্তু এবার সে নিয়ম নেই। এবার আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আগে কোন নির্দিষ্ট সময়ের বাধ্যবাধকতা নেই। তারপরও ভিসা, আনুষঙ্গিক কাগজপত্র তৈরি এবং বিশ্বকাপ জার্সিসহ অন্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে বিসিবি ঠিকই ৩০ জনের প্রাথমিক দল জমা দেবে আইসিসির কাছে।
সে বিষয়ে জাগো নিউজের পাঠকরা আগেভাগেই জেনে গেছেন। সম্ভাব্য খেলোয়াড় তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে জাগো নিউজে। গত বছরের শেষ দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজের আগে যে কন্ডিশনিং ক্যাম্প হয়েছিল, সেখানে থাকা ৩০ জনের ২৪-২৫ জন আছেন বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে।
এর বাইরে তখন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার খড়গ কাঁধে থাকায় সাব্বির রহমান, বিপিএল ও ডিপিএলে নজরকাড়া পারফরমার ফরহাদ রেজা, তাসকিন আহমেদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং ইয়াসির আলি আরাফাত আছেন।
এই খেলোয়াড় তালিকা জমা দেয়া সম্পর্কে বিসিবি পরিচালক এবং ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেন, ‘ভিসা নিয়ে অনেক সময় সমস্যা হয়। ফলে দ্রুত আমরা খেলোয়াড় পাঠাতে পারি না। আমরা ৩০-৩৫ জনের ভিসা করে রাখবো।’
Advertisement
আরও বিষয় নিয়ে বলেন, ‘আমাদের আগের যে নিয়ম ছিল ৩০ জনের একটা দল দিতে হতো। কিন্তু নতুন যে নিয়ম করেছে তা হলো, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আমাদের ১৫ জনের নাম দিতে হবে। তবে ২২ মে পর্যন্ত আমরা পরিবর্তন করতে পারবো। ২২ মে’র পর যদি কোন খেলোয়াড়ের ইনজুরি হয়, তাহলে আমরা খেলোয়াড় পাঠাতে পারবো। আগে কিন্তু তা পাঠানো যেতো না।’
আজ মিডিয়ার সাথে আলাপে ওই প্রাথমিক দল নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান টিম বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু হবে আগামী ২২ এপ্রিল থেকে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, তামিম, মুশফিক আর সাকিব ছাড়া বাকি সব জাতীয় ক্রিকেটারই (এর মধ্যে কেউ ফিটনেসের কারণে বা ইনজুরি শিকার না হলে) প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ খেলবেন। তাদের মধ্য থেকে ২২-২৩ জনের একটা প্রাথমিক দল সাজিয়ে শুরু হবে মূল অনুশীলন।
এ বিষয়ে আকরাম খান বলেন, ‘বিশ্বকাপ ও আয়ারল্যান্ড সফর সামনে রেখে ২২ এপ্রিল থেকে আমাদের অনুশীলন শুরু হবে। আমরা ১৫ জন দল তো দিবই। তাছাড়া স্ট্যান্ড বাই খেলোয়াড়সহ ২২-২৩ জনকে নিয়ে অনুশীলন শুরু করবো। তবে আয়ারল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগে আমরা বাংলাদেশেই অনুশীলনটা করবো। তারপর প্রথমে মে মাসে আয়ারল্যান্ড সফরে যাব আমরা। এরপর ১৮ মে আমরা ইংল্যান্ড যাব। সেখানে ২৩ মে পর্যন্ত অনুশীলন করবো।’
প্রসঙ্গত প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আগেই জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যেই তারা ১৫ জনের দল চূড়ান্ত করে বোর্ডে জমা দেবেন।
এআরবি/আইএইচএস/পিআর