সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘ ২৮ বছর ১০ মাস পর আজ (১১ মার্চ) অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘দেশের মিনি পার্লামেন্ট’ খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হল সংসদের নির্বাচন।
Advertisement
সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এই নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ১৮ হলে প্রস্তুত করা হয়েছে ৫০৮টি বুথ। ৪২ হাজার ৯২৩ ভোটারের জন্য এসব বুথ তৈরি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি ও হল সংসদের ১৩টিসহ মোট ৩৮টি পদের জন্য ভোট দেবেন শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি পদের বিপরীতে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ২২৯ জন। আর প্রতিটি হল সংসদে ১৩টি পদের জন্য ১৮টি হলে ৫০৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ডাকসুর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ২১ জন এবং জিএস পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া এজিএস পদে ১৩ জন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯ জন, কমনরুম-ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৯ জন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, সাহিত্য সম্পাদক পদে ৮ জন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ১২ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১১ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১০ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৪ জন এবং ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে ৮৬ জন নির্বাচন করবেন।
Advertisement
অন্যদিকে হল সংসদে ১৮টি হলে ১৩টি করে পদের বিপরীতে প্রার্থী রয়েছেন মোট ৫০৯ জন। এর মধ্যে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ২৭ জন, জগন্নাথ হলে ২৮ জন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বলে ১৭ জন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২৬ জন, অমর একুশে হলে ২৯ জন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৭ জন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে ৩৪ জন, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৩৩ জন, রোকেয়া হরে ৩০ জন, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৩০ জন, শামসুন্নাহার হলে ২৫ জন, কবি জসীম উদ্দীন হলে ২৫ জন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ২২ জন, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৬ জন, বিজয় একাত্তর হলে ৩০ জন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২৭ জন, স্যার এ এফ রহমান হলে ৩৭ জন এবং সূর্যসেন হলে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এর আগে সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ৬ জুন ডাকসু নির্বাচন হয়। এরপর ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সাত বছরে তিনবার তফসিল ঘোষণা করা হয়েও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়নি। ১৯৯৮ সালে ডাকসুর কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। ওই সময় পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
দেশের দ্বিতীয় সংসদ হিসেবে খ্যাত ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভ মিছিল, ধর্মঘট, মানববন্ধন, কালো পতাকা মিছিল, অনশন এমনকি উচ্চ আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়ায়।
২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষার্থীর করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করতে আদেশ দেন। পরের মাসে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নেয়, ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে এই নির্বাচন হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১১ মার্চ এই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
Advertisement
এফএ/এমএমজেড/এমবিআর/এমকেএইচ