অর্থনীতি

এক বছরে বিমানের লোকসান ২০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা

বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী জানিয়েছেন, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড ২০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। এ সময়ে বিমানের মোট আয় ছিল ৪ হাজর ৯৩১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। পক্ষান্তরে ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ১৩৩ কোটি ১১ লাখ টাকা।

Advertisement

রোববার জাতীয় সংসদে গাজী শাহনেওয়াজের (হবিগঞ্জ-১) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এই তথ্য জানান। বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের এই বৈঠক শুরু হয়।

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, এর আগের তিন অর্থবছর লাভে ছিল রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাটি। তার মধ্যে ২০১৬-১৭ সালে ৪৬ কোটি ৭৬টাকা, ২০১৫-১৬ সালে ২৩৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং২০১৪-১৫ সালে ২৭৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা লাভ করেছে বিমান।

তিনি জানান, গত অর্থবছরে উড়োজাহাজের জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি, বৈদেশিক মূদ্রার বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও এয়ারক্রাফট ক্রু মেইনটেনেন্স ইনস্যুরেন্স (এসিএমআই) ভিত্তিতে উড়োজাহাজ ব্যবহারের কারণে বিমানকে ২০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লোকসান দিতে হয়েছে।

Advertisement

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, বিমানকে লাভজনক করার লক্ষ্যে নতুন নতুন রুট চিহ্নিতকরণ এবং বর্তমান লাভজনক রুটে ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নতুন গন্তব্য হিসেবে গুয়াংজু, মদিনা, কলম্বো মালে ইত্যাদি রুটে অদূর ভবিষ্যতে বিমানের সার্ভিস চালু করা হবে। এছাড়া এয়ারক্রাফট ক্রু মেইনটেনেন্স ভিত্তিতে সংগৃহীত উড়োজাহাজের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

১৫ আন্তর্জাতিক ও ৭ আভ্যন্তরীণ রুটে চলছে বিমান : মো. শাহে আলমের (বরিশাল-২) এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ালাইন্সের বহরে ১৩টি উড়োজাহাজ ১৫টি গন্তব্যে চলাচল করছে। তার মধ্যে ৪টি ৭৭৭-৩০০ ইআর (নিজস্ব), ২টি ৭৮৭-৮ (নিজস্ব), ৪টি ৭৩৭-৮০০ ( ২টি নিজস্ব ও ২টি লিজকৃত) এবং ৩টি ড্যাস-৮ কিউ ৪০০ (লিজকৃত) উড়োজাহাজ ১৫টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে চলাচল করছে। গন্তব্যগুলো হলো- কলকাতা, ইয়াগুন, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, কাঠমান্ডু, দুবাই, আবুধাবি, মাস্কাট, দোহা, কুয়েত, রিয়াদ, জেদ্দা, দাম্মাম ও লন্ডন। এছাড়া ৭টি আন্তর্জাতিক গন্তব্য হলো- চট্টগ্রাম, সিলেট, যশোর, রাজশাহী, সৈয়দপুর, কক্সবাজার ও বরিশাল।

যোগ হচ্ছে আরও ৩ উড়োজাহাজ : এম. আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, জি টু জি পর্যায়ে কানাডা থেকে তিনটি ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ সংগ্রহের লক্ষ্যে গত ১ আগস্ট’২০১৮ একটি চুক্তি হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রথম উড়োজাহাজটি আগামী বছরের মার্চে, দ্বিতীয়টি মে মাসে এবং তৃতীয়টি জুনে সরবরাহ করা হবে। এগুলো ৭টি অভ্যন্তরীণ এবং কোলকাতা ও ইয়াঙ্গুন আঞ্চলিক গন্তব্যে চলাচল করবে।

বিশ্বের ৫৩ দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল চুক্তি : একে এম রহমতুল্লাহর (ঢাকা-১১) এক প্রশ্নের জবাবে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের ৫৩টি দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল চুক্তি রয়েছে। দেশগুলো হলো- আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, বেলজিয়াম, ভুটান, কানাডা, চীন, মিশর, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, আইসল্যান্ড, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, ইতালি, জাপান, জর্ডান, কেনিয়া, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, কুয়েত, লিবিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মরক্কো, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, পোলান্ড, কাতার, রাশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্লোভাকিয়া, শ্রীলংকা, সিরিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইউএসএ, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম, ইয়েমেন ও যুগোশ্লাভিয়া (সাবেক)।

Advertisement

সপ্তাহে ৩২৫ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট : একই প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন বিমান সংস্থা বাংলাদেশে বর্তমানে সপ্তাহে মোট ৩২৫টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এর মধ্যে ভারত ৫৩টি, ইউএই ৭৮টি, মালয়েশিয়া ৪২টি, সিঙ্গাপুর ১৬টি, ভুটান ৪টি, কাতার ২৯টি, থাইল্যান্ড ২১টি, পাকিস্তান ৪টি, কুয়েত ১২টি, সৌদি আরব ৩১টি, শ্রীলংকা ৭টি, চীন ১৬টি, বাহরাইন ৫টি, আজারবাইজান ৩টি এবং ওমান ৪টি ফ্লাইাট পরিচালনা করছে।

এইচএস/এমএমজেড/পিআর