বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের বহির্বিভাগে বছরে ৭ হাজার শিশু কিডনি সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে ছয় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়া এসব রোগীদের মধ্যে মৃত্যু হার ১ শতাংশ।
Advertisement
বিশ্ব শিশু কিডনি দিবসকে সামনে রেখে শিশুদের কিডনি রোগের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ও শিশুদের কিডনি রোগ প্রতিরোধে রোববার (১০ মার্চ) দুপুরে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে আয়োজিত ‘শিশু কিডনি সপ্তাহ ২০১৯ ও ডায়ালাইসিস কর্মশালা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
বর্তমানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত যে সকল শিশু বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় তাদের মধ্যে ৫ থেকে ৭ শতাংশ শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
এবারে শিশু কিডনি দিবসের প্রতিপাদ্য হলো- ‘সুস্থ কিডনি সবার জন্য, সর্বত্র’। শিশু কিডনি সপ্তাহ উপলক্ষে ‘আপনার শিশুর কিডনি সুস্থ আছে তো; আসুন আজই আপনার শিশুর কিডনির সুস্থতা পরীক্ষা করে নিন এবং শিশুর কিডনি রোগ প্রতিরোধ করুন’ কর্মশালা আয়োজন করা হয়।
Advertisement
বিএসএমএমইউ শিশু কিডনি বিভাগের অধ্যাপক ও পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মাঈন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মশালার উদ্ভোধন করেন বিএসএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের শিশু নেফ্রোলজি বিভাগের হেড অ্যান্ড সিনিয়র প্রফেসর এবং ইন্টারন্যাশনাল প্যাডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ইয়াপ হুই কিম।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, এই ধরনের কর্মশালা তরুণ চিকিৎসকদের মাঝে শিশু কিডনি রোগ বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাথে সাথে শিশু কিডনি রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিশু কিডনি রোগীদের চিকিৎসাসেবার প্রসারেও বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
বিএসএমএমইউ’র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু কিডনি বিভাগের অধ্যাপক ও পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলামমাঈন উদ্দিন জানান, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, দেশের হাসপাতালগুলোতে আগত শিশু রোগীর ৫ থেকে ৭ ভাগ শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত। তবে শিশু কিডনি রোগীদের চিকিৎসাসেবায় দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ৬০ থেকে ৭০ জন চিকিৎসক বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
Advertisement
বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা শিশু হাসপাতালে শিশু কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বছরে প্রায় ২ থেকে আড়াই হাজার ডায়ালাইসিস দেয়া হচ্ছে।
পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মাঈন উদ্দিন বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপন ক্রনিক শিশু কিডনি রোগীদের প্রধান চিকিৎসা। এই চিকিৎসা শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদান করা হচ্ছে। ২০০৬ সাল থেকে এ হাসপাতালে ১১ জন শিশুর চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে এবং এ সকল শিশু সুস্থ আছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিএনএসবি’র মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন খান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু কিডনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রণজিত রঞ্জন রায়।
এমইউ/আরএস/পিআর